শরীয়তপুরে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে আসা ২ রোহিঙ্গাসহ আটক ৩

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে জাতীয় পরিচয়পত্র করতে আসা দুই রোহিঙ্গা তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের ভাষা ও তথ্যের গরমিল পেয়ে দুই তরুণকে চ্যালেঞ্জ করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। তখন পুলিশ তাদের আটক করেন। সেই সঙ্গে ওই দুই তরুণকে সহযোগী আরও একজনকে আটক করা হয়।
গতকাল সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের গোসাইরহাট থানায় নেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা আইনে মামলা হয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে মুঠোফোনে গোসাইরহাট থানার ওসি মো. মাকসুদ আলম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন- কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বালুখালি এলাকার ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আবুল ফকির আহমেদের ছেলে মো. ইয়াসিন (২১), বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া গ্রামের মৃত সোনা আলীর ছেলে মো. হোসেন (২৮) ও গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের মধ্য দেওয়ানপাড়া গ্রামের মৃত কালিম উদ্দিনের ছেলে মো. আহসান উল্লাহ (৫৮)।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য দুই তরুণ ও এক ব্যক্তি আসেন।
জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য জমা দেয় কাগজপত্র দেখে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু দাউদ তাদের সন্দেহ করেন। তখন তাদের নানা ধরনের প্রশ্ন করা হয়। নির্বাচন কর্মকর্তার জেরার মুখে ওই দুই তরুণ স্বীকার করেন তারা রোহিঙ্গা। কক্সবাজারের টেকনাফের দুটি ক্যাম্পের বাসিন্দা।
তাদের সাথে থাকা আহসান উল্ল্যাহ তাদের নিজের ছেলে বলে পরিচয় দেন। আহসান উল্ল্যাহর ঠিকানা যাচাই করে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানতে পারেন তিনি গোসাইরহাটের কোদালপুর এলাকার বাসিন্দা। তখন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে গোসাইরহাট থানাকে ঘটনাটি জানানো হয়। পরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ ওই তিন ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যান।
উপজেলা নির্বচন কর্মকর্তা আবু দাউদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র করার জন্য আবেদন করা মো. হোসেন নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৪ নভেম্বর জন্মনিবন্ধন সনদ উঠিয়েছেন। আরেক আবেদন করা মো. ইয়াসিন ৫ নভেম্বর ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কালিন্দি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ উঠিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘জন্মনিবন্ধনে ওই দুই তরুণের ঠিকানা লেখা গোসাইরহাটের কোদালপুর। বাবার নাম হিসেবে আহসান উল্লাহর নাম লেখা। তাদের দুজনের জাতীয়তা ও চারিত্রিক সনদপত্র দেওয়া হয়েছে কোদালপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। আমরা ওই ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা তরুণ, তাদের সহায়তাকারী দালাল ও এ ঘটনায় যারা সংশ্লিষ্ট তাদের নামে প্রতারণা আইনে মামলা দায়ের করেছি।’
গোসাইরহাট থানার ওসি মো. মাকসুদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গোসাইরহাটের এক ব্যক্তি গতকাল জাতীয় পরিচয়পত্র করতে আসা দুই তরুণ রোহিঙ্গাকে সহায়তা করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই তরুণ স্বীকার করেছেন যে তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।’
সূত্র : কালের কন্ঠ
on/abr