নারায়ণগঞ্জে মাদক ব্যবসার বিস্তার, যুবসমাজ বিপদের মুখে

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার হাটে-ঘাটে এবং পাড়া মহল্লায় মাদক, গাঁজা, ফেনসিডিল, বিয়ার ও ইয়াবার সহজলভ্যতা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় যুবসমাজ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকের সেবন বাড়ছে। সোনারগাঁ পৌর এলাকার মাদক সমস্যা বিশেষভাবে ভয়াবহ, যেখানে ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১০০টিরও বেশি গ্রাম প্রভাবিত হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নৈকট্য এবং হাইওয়েটি পার্শ্ববর্তী অঞ্চল মাদক পাচারের প্রধান রুট হিসেবে কাজ করছে। ফেনসিডিল কুমিল্লা দিয়ে ভারত থেকে, আর ইয়াবা মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রশাসনিক অভিযানে মাঝেমাঝে বড় মাদকের চালান আটক হলেও পাচারকারীরা নতুন কৌশল অবলম্বন করে মাদক সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈদ্যের বাজার, পিরোজপুর, কাঁচপুর ও মোগরাপাড়া সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে মাদক বিতরণ ও সেবনের পরিমাণ বাড়ছে। নদীপথে মাদক পাচার বৃদ্ধির ফলে সড়ক পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের মেঘনা ঘাট ও বারদী ইউনিয়নের ছাতকিয়া ঘাট দিয়ে মাদক পাচার হচ্ছে। বালির ট্রলার ও পণ্যবাহী জাহাজ মাদক পরিবহনের পছন্দের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
সোনারগাঁ থানায় জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ খুরশিদ আলমের তত্ত্বাবধানে গত বৃহস্পতিবার ফোর্স অভিযান চালিয়ে ৭৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মো. সামাদকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, মূল অপরাধী ও নাটের গুরুরা এখনও ধরা পড়েনি।
প্রায় ৬০০ নিবন্ধিত মাদক ব্যবসায়ীর অস্তিত্বের ইঙ্গিত রয়েছে সোনারগাঁয়ে। অনেককে গ্রেপ্তার হলেও আইনি ফাঁকফোকর দিয়ে জামিন পেয়ে তারা পুনরায় অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যেখানে কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সচেতন জনগোষ্ঠি মতে, মাদক মহামারী রোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। অন্যথায়, সোনারগাঁয়ের যুবকরা মাদকের করাল গ্রাসে মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
-মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন,সোনারগাঁ,নারায়ণগঞ্জ
ON/RMN