ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্য ও চীনের জন্য ট্রাম্পের জয়ের অর্থ কী
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে ফিরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে, যা বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে আমূল পরিবর্তনের সম্ভাবনা রাখে।
নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট নীতির উল্লেখ না করে বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যার ভিত্তি মূলত অহস্তক্ষেপ ও বাণিজ্য সুরক্ষাবাদের ওপর, যা তিনি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বলে অভিহিত করেন।
ট্রাম্পের জয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বহু বছরের অন্যতম বৃহৎ পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, বিশেষ করে এমন একসময় যখন বিশ্বজুড়ে একাধিক সংকট চলছে। তার প্রচারণায় করা মন্তব্য এবং ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তার মেয়াদকালে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলে তার সম্ভাব্য নীতির কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
রাশিয়া, ইউক্রেন ও ন্যাটো
প্রচারণায় ট্রাম্প বহুবার বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ‘এক দিনে’ শেষ করতে পারবেন। কিভাবে করবেন জানতে চাইলে তিনি কেবল আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের ইঙ্গিত দেন। তবে তিনি এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
মে মাসে ট্রাম্পের দুই সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানের একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ চালিয়ে যেতে পারে, তবে কিয়েভকে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় রাজি করানো হবে
রাশিয়ার জন্য প্রণোদনা হিসেবে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের প্রক্রিয়া বিলম্বিত রাখার প্রস্তাবও ছিল।
অন্যদিকে ডেমোক্র্যাকট প্রতিদ্বন্দ্বীরা দাবি করেন, এই নীতি ইউক্রেনের আত্মসমর্পণের সমান হবে এবং পুরো ইউরোপকে বিপদে ফেলবে। তবে ট্রাম্পের অগ্রাধিকার হলো যুদ্ধ বন্ধ করা ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের ক্ষয় রোধ করা।
এ ছাড়া ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় ন্যাটো সম্পর্কেও তার আগ্রহ ছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের অংশ হিসেবে গড়ে ওঠে।
তিনি বরাবরই ইউরোপকে যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষা প্রতিশ্রুতিতে পরনির্ভরশীল বলে সমালোচনা করেছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো থেকে সরাসরি সরে আসবে কি না, তা এখনো অমীমাংসিত, তবু যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ প্রতিরক্ষা সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রায় এক শতাব্দীর বৃহত্তম পরিবর্তন ঘটবে।
ট্রাম্পের মিত্ররা মনে করেন, এটি হয়তো সদস্য দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা খাতে আরো ব্যয় করতে চাপ সৃষ্টির কৌশল। তবে ন্যাটো নেতারা সত্যিই উদ্বিগ্ন, ট্রাম্পের জয় জোটের ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করতে পারে।