পরিবার হারিয়ে নিঃস্ব ১২০ বছরের জায়েদা বেগম, জীবনযুদ্ধে বেঁচে আছেন ঝুপড়ি ঘরে

পরিবার হারিয়ে ১২০ বছর বয়সী জায়েদা বেগম চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার একটি ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। শারীরিকভাবে চলাফেরায় অক্ষম এই বৃদ্ধা বর্তমানে একমাত্র সন্তান ও নাতির সঙ্গে কোনোমতে বেঁচে আছেন। স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হারিয়ে এখন তিনি প্রায় নিঃস্ব।
জানা গেছে, কচুয়া উপজেলার সাচার ইউনিয়নের হাতিরবন্দ গ্রামের মিয়াজী বাড়িতে ছোট্ট একটি জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন জায়েদা বেগম। স্বামী বস্কর আলীর মৃত্যুর পর আর বিয়ে করেননি তিনি। সময়ের ব্যবধানে পরিবারের অন্য সদস্যদের হারিয়ে নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে ভরসা শুধু একজন ছেলে, কিন্তু তিনিও দরিদ্র হওয়ায় মায়ের দেখভাল করতে পারেন না নিয়মিত। ফলে অসুস্থ জায়েদা বেগম দিন কাটাচ্ছেন অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে।
প্রতিবেশীরা জানান, ‘গত কয়েক বছর ধরে কোনো রকমে ভাত জুটছে জায়েদা বেগমের। অন্যের সাহায্যে রান্নাবান্না চলে। কিন্তু নিয়মিত সহায়তা মেলে না। তার ঝুপড়ি ঘরটিও ধ্বংসের মুখে, ছাউনির উপরটা ভাঙা, সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে পানি জমে যায়।’ তারা সরকারি উদ্যোগে ঘর নির্মাণের আহ্বান জানান।
বৃদ্ধা জায়েদা বেগম বলেন, ‘জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃখ, সরকারি সহায়তার আবেদন করেও এখনও পর্যন্ত কোনো ঘর পাইনি। বহুবার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে ঘর চেয়েছি, কিন্তু কেউই কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।’ তবে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে তিনি বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন বলে জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘একাকী অসহায় জায়েদা বেগম আজ ভেঙে পড়েছেন। তার এই মানবেতর অবস্থায় কোনো খোঁজখবর নেওয়ার লোক নেই। একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য বিত্তশালীদের কাছে আকুতি জানিয়েছি। পাশাপাশি সরকারি সহায়তা আসলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কচুয়া উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জায়েদা বেগম সরকারি ভাতাভোগীদের আওতায় রয়েছেন। তবে তার ঘর নির্মাণে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে সহায়তা প্রদান করা হবে।’
–মো: মাসুদ মিয়া, কচুয়া
–ON/SMA