১২ কোটি টাকার সড়ক সংস্কার প্রকল্পে স্থবিরতা, ধুলায় নাকাল মঠবাড়িয়ার মানুষ

মঠবাড়িয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিরুখালি সড়কের সংস্কারকাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় ভোগান্তির শিকার ছিলেন পথচারী ও যানবাহনচালকেরা। সংস্কারকাজ শুরু হলে কিছুটা স্বস্তি মিললেও, ৫ আগস্টের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ ফেলে চলে যাওয়ায় পুনরায় বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। বর্তমানে রাস্তার ইটের খোয়া উঠে গিয়ে ধুলাবালির সৃষ্টি করেছে, যা শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুন মাসে ভাণ্ডারিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ইফতি টিসিএল’-কে ১২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মঠবাড়িয়া শূন্য কিলোমিটার থেকে টাকবাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পটি দুইটি প্যাকেজে বিভক্ত, যার মধ্যে প্রথম প্যাকেজে ৩ কিলোমিটার সংস্কারে ৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় প্যাকেজে ৩ কিলোমিটারের জন্য ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। কাজ সম্পন্নের নির্ধারিত সময়সীমা ছিল ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস। তবে সংস্কারের কাজ শুরু হলেও অসম্পূর্ণ রেখেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উধাও হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরোনো কার্পেটিং তুলে ইটের খোয়া ফেলা হলেও তা উঠে গিয়ে চলাচলের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধুলার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসছে, ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। প্রতিদিন গড়ে ৪-৫ হাজার যানবাহন চলাচল করত এই সড়কে, কিন্তু ধুলার প্রকোপে এখন গুটিকয়েক গাড়িই চলাচল করছে। স্থানীয়রা বলছেন, বর্ষা শুরু হলে এই সড়ক পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যাতে দ্রুত কাজটি শেষ করা যায়। তবে কিছু জটিলতা রয়েছে। জেলা পরিষদ ৭৪টি গাছ কাটার অনুমতি দেয়নি, ফলে কাজ পিছিয়ে গেছে। এছাড়া, ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বিল দেওয়া হলেও, সরকার পরিবর্তনের কারণে ঠিকাদার ৩.৫ কোটি টাকার বিল দাখিল করতে পারেননি।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ না হলে বর্ষায় সড়ক পুরোপুরি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
–মেহেদী হাসান, মঠবাড়িয়া
–ON/ SMA