রায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: টেঁটাবিদ্ধ ও গুলিতে নিহত ২, আহত অন্তত ১০

–নিহত আমিন মিয়ার মা এর আহাজারি
নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে দীর্ঘদিনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোরে চাঁনপুর ইউনিয়নের মোহিনীপুর সদাগরকান্দি গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন মোহিনীপুর সদাগরকান্দি গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (২৬) ও আব্দুল বারিকের ছেলে আবুল বাশার (৩৭)। তারা দুজনেই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের অনুসারী ছিলেন।
সংঘর্ষের কারণ
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁনপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য (ইউপি) সামসু মিয়ার অনুসারীদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। প্রায় ছয়-সাত মাস ধরে সামসু মেম্বারের ভয়ে সালামের অনুসারীরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। শুক্রবার ভোরে ঈদকে সামনে রেখে তারা নিজ বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করলে সামসু মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমিন মিয়া ও আবুল বাশার টেঁটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার দুইজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, ‘কুখ্যাত সন্ত্রাসী সামসু মেম্বার এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সে নিয়মিত অত্যাধুনিক অস্ত্রের মহড়া দেয়। গত ছয় মাস ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে আমার অনুসারীরা অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। ঈদকে সামনে রেখে আজ আমার লোকজন বাড়িতে ফিরছিল, তখন সামসু মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমার পক্ষে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহতসহ দুইজন নিহত হয়েছেন।’
পুলিশ ও চিকিৎসকের বক্তব্য
রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাবেয়া সুলতানা জানান, সংঘর্ষে মৃত দুইজনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের শরীরে টেঁটা ও গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘দুইজন নিহত হয়েছেন, আমরা লাশ বুঝে পেয়েছি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।’
–হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
–ON/SMA