শেরপুরের বাজিতখিলায় ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়ম, বঞ্চিত প্রকৃত দরিদ্ররা

শেরপুর সদর উপজেলার ৩নং বাজিতখিলা ইউনিয়ন পরিষদে ঈদুল ফিতরের উপহার হিসেবে বরাদ্দকৃত ভিজিএফ চাল বিতরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সঠিক তালিকা ছাড়াই চাল বিতরণ করায় প্রকৃত দরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছেন, যা এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
অভিযোগকারীদের মতে, দরিদ্র জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত ৩,৭৩০টি ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে মাথাপিছু ১০ কেজি চাল বিতরণের কথা থাকলেও, বেশিরভাগ কার্ড ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা আত্মীয়স্বজন ও পছন্দের ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। ফলে প্রকৃত দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিরা চাল পাননি।
স্থানীয় এক বিধবা নারী সুলে বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভোটের সময় ভোট নিতে আসে, কিন্তু কিছু দেয় না চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। আমি কার্ড পাইনি, তাও চাল নিতে এসেছিলাম।’
স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল হক বলেন, ‘আমরা কার্ড পাওয়ার যোগ্য হয়েও পাইনি। আমাদের দুই গ্রামের কেউই কার্ড পায়নি। অথচ যাদের ধন-সম্পদ আছে, তারাই পাচ্ছে। ৪-৫টি করে কার্ড দিচ্ছে, চাল নিয়ে এসে বিক্রি করছে। আমাদের কিছুই দেয়নি, আমরা এর বিচার চাই।’
এছাড়াও, অভিযোগ রয়েছে যে, স্থানীয় এক চাল সিন্ডিকেট সদস্য আব্দুল জলিল, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সুসম্পর্কের কারণে কৌশলে পরিষদের বেশিরভাগ কাজ দখল করে নেন। অভিযোগকারীরা দাবি করেন, তিনিই পরিষদ থেকে স্লিপের মাধ্যমে চাল উত্তোলন করেছেন।
এ বিষয়ে বাজিতখিলা ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও সদর উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিয়াসাদ সাদাত হোসেন জানান, ‘চেয়ারম্যান যা করেছেন, তা নিঃসন্দেহে ফ্যাসিস্টের মতো কাজ। আমি ভিজিএফ চাল বিতরণ সম্পর্কে কিছুই জানি না। প্রকৃতপক্ষে, আমাকে উপস্থিত রেখে বিতরণ করার কথা থাকলেও সেটি হয়নি। অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটাও আমি জানি না।’
তবে বাজিতখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ আল হাসান খুররম বলেন, ‘আমি বরাদ্দকৃত চাল যথাযথ নিয়মে বিতরণ করেছি। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় সবার মধ্যে শ্লিপ দেওয়া সম্ভব হয়নি।’
–মো. শরিফ উদ্দিন বাবু, শেরপুর
–ON/SMA