ঝালকাঠির সাবেক পিপি আবদুল মান্নানের জামিন নামঞ্জুর, তিন মামলায় কারাগারে

ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুল মান্নানকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের তিনটি মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (১৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ঝালকাঠি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আবদুল মান্নান গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে চলে যান। ঝালকাঠি জেলা বিএনপি কার্যালয়ে বোমা বিস্ফোরণ ও হামলা, জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের বাসায় হামলা-ভাঙচুর, আইনজীবী সমিতিতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় মোট ছয়টি মামলা হয়।
এসব মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে গত ১৯ ও ২০ জানুয়ারি আট সপ্তাহের আগাম জামিন লাভ করেন। জামিনের মেয়াদ শেষে রোববার তিনি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তিনটি মামলার শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অপর তিনটি মামলার শুনানির জন্য আগামী ১৮ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহেব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সাবেক পিপি আবদুল মান্নান একাধিক মামলার আসামি। তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আজ জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আদালতে হাজির হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আবদুল মান্নান দীর্ঘ ১৬ বছর পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। তিনি বিনা ভোটে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতির পদ ১০ বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার সময়কালে বিভিন্ন মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগও রয়েছে। আইনজীবী সমিতির সভাপতি পদেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে নিজের আধিপত্য বজায় রেখেছিলেন।’
আবদুল মান্নান শুধু জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন না, তিনি জেলা কৃষক লীগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া, ২০০৯ সাল থেকে সরকারি কৌঁসুলি থাকার পাশাপাশি তিনি জেলা পরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
আদালতে আবদুল মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বনি আমীন বাকলাই। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন পাবলিক প্রসিকিউটর মাহেব হোসেন।
–মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি
–ON/SMA