এক সাইকেলে ৫৩ বছর পার, বাবার স্মৃতি আঁকড়ে আছেন টিউবওয়েল মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর

১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে পাওয়া একটি জাপানি মডেলের সাইকেলই জীবিকার প্রধান বাহন হয়ে আছে চাঁদপুরের কচুয়ার টিউবওয়েল মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের জন্য। বাবার দেওয়া সাইকেলটি তিনি আজও আগলে রেখেছেন, যা দিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল মেরামতের কাজ করেন তিনি। এই সাইকেলেই চলে তার সংসার, যেখানে রয়েছেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে।
জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল গ্রামের প্রধানীয়া বাড়িতে। তার বাবা আব্দুর রব ছিলেন একজন দক্ষ টিউবওয়েল মিস্ত্রি। সরকারি চাকরির সুবাদে তিনি জাপানি মডেলের একটি সাইকেল উপহার পেয়েছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর সেই সাইকেলটিই ধরে রেখেছেন জাহাঙ্গীর আলম। দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে ব্যবহারের পরও সাইকেলটি এখনো সচল। তিনি কেবল টায়ার, টিউব ও স্ক্রু পরিবর্তন করেছেন, কিন্তু সাইকেলের রিংয়ে এখনো মরিচা ধরেনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি এই সাইকেলটি ব্যবহার করছি। আজও এটি নষ্ট হয়নি। বাবার স্মৃতি ধরে রাখতেই এটি চালিয়ে যাচ্ছি। সাইকেলটি দিয়েই মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল মেরামতের কাজ করি। এই আয়ে আমার সংসার চলে। ভবিষ্যতেও বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে এটি ব্যবহার চালিয়ে যেতে চাই।’
স্থানীয়রা জানান, জাহাঙ্গীর আলম একজন সৎ ও সহজ-সরল মানুষ। সাইকেল চালিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানুষের বাড়ি গিয়ে টিউবওয়েল মেরামতের কাজ করে আসছেন। তার সততা ও দক্ষতার কারণে এলাকায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।
বয়স ৬০ পার হলেও জীবিকার তাগিদে আজও তিনি সেই পুরনো সাইকেল চালিয়ে কাজ করে চলেছেন। আধুনিক যুগেও তিনি বাবার স্মৃতি হিসেবে সাইকেলটিকে আগলে রেখেছেন, যা তার একমাত্র বাহন ও জীবিকার মাধ্যম।
–মো: মাসুদ মিয়া,কচুয়া
–ON/SMA