কুড়িগ্রামে নিয়োগ জালিয়াতি: কামাত আঙ্গারিয়া মাদ্রাসার সুপার গ্রেফতার

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে নিয়োগ জালিয়াতির অভিযোগে কামাত আঙ্গারিয়া মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী ও মামলার নথি অনুযায়ী, সুপার সাইদুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি কর্মরত অফিস সহকারী সফিয়ার রহমানকে এবতেদায়ী জুনিয়র শিক্ষক হিসেবে দেখিয়ে গত আগস্ট ২০২৪ মাসে নতুন করে এমপিওভুক্ত করেন। অথচ সফিয়ার রহমান ২০০২ সালে (ইনডেক্স: ২৬৯২৩৩২) অফিস সহকারী পদে যোগ দেন এবং ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেল লাভ করেন।
এছাড়া, অফিস সহকারী পদ শূন্য দেখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে খালেদুজ্জামানকে (ইনডেক্স: গ০০৫৪১৮০) ঐ পদে নিয়োগ দেন, যার এমপিওভুক্তির তারিখ মার্চ ২০২৪। তবে তার বয়স ৪৬ বছর পেরিয়ে যাওয়ায় এমপিওভুক্তির নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপার সাইদুর রহমান তার আপন ভাতিজা মোস্তাফিজুর রহমানকে সহকারী মৌলভী হিসেবে নিয়োগ দেন। অথচ নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক হলেও তার কোনো সনদ ছিল না। সুপার অন্য একজনের নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে মোস্তাফিজুর রহমানকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ১ মার্চ ২০১৮ তারিখে এমপিওভুক্ত করেন (ইনডেক্স: ঘ২১২১৭৮৩)।
ভুক্তভোগীরা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অভিযোগ দায়ের করলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। তবে যথাযথ প্রতিকার না পাওয়ায় সফিয়ার রহমান কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আমলী আদালতে সুপার সাইদুর রহমানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ভূরুঙ্গামারী থানাকে এফআইআর গ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপর, সোমবার দুপুর ২টায় উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে পুলিশ সুপার সাইদুর রহমানকে আটক করে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ সুপার সাইদুর রহমানের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই ঘটনায় শিক্ষা খাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র আবারও সামনে এসেছে। নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে কীভাবে অযোগ্য ব্যক্তিদের এমপিওভুক্ত করা হয়, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মামলার পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল ও সাধারণ মানুষের দৃষ্টি রয়েছে।
–জাহিদ খান, কুড়িগ্রাম
–ON/SMA