সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ, অনিশ্চয়তায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে গুচ্ছ পদ্ধতি থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে আজ বুধবার বৈঠক করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে তুলনামূলক বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে, নতুন প্রতিষ্ঠিত এবং তুলনামূলক কম শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মতামত দেন। শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই এ বৈঠক শেষ হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্তত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছে সমকাল। তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। একই তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা খানও। তিনি জানান, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যদের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পাওয়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম।
সিরাজ-উদ-দৌলা খান আরও জানান, বৈঠকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তির বিষয়ে বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের মতামত গ্রহণ করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডারদের (অংশীজন) সঙ্গে আরও আলোচনা করে একটি সর্বজনগ্রাহ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গুচ্ছে থাকতে চায় না এমন একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, ‘সব উপাচার্য নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সভায় তুলে ধরেছেন। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায়। তুলনামূলক নতুন ও কম শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ পদ্ধতি ভর্তি কার্যক্রম রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। একেবারে সংখ্যাগরিষ্ঠ কোনো মতামত না আসায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’
দেশের উত্তরাঞ্চলের আরেকটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাম প্রকাশ না করে বলেন,
‘যাদের এখনো ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সক্ষমতা নেই, তারাই গুচ্ছ পদ্ধতি রাখার পক্ষে সভায় কথা বলেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে কথা বলবেন। ইউজিসির সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি। পাশাপাশি শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের মতামতও নেওয়া হবে। সবাই যেভাবে চান, শেষ পর্যন্ত সেটা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘যদি এবারও শেষ পর্যন্ত গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে যায়, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কমবে। কারণ যারা এরই মধ্যে এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন, তাদের আর গুচ্ছে ফেরার সুযোগ নেই। অনেকে হয়তো মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলেও এবছর গুচ্ছে থাকবে না। অর্থাৎ, স্বল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শেষ পর্যন্ত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তবে মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘উপাচার্যরা বিভক্ত। ফলে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের কাছেও উপস্থাপন করা হতে পারে। তাছাড়া ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মতামতও নেওয়া হতে পারে।’
সূত্র: সমকাল
ON/ORNB