নাব্যতাসংকটে পায়রায় ভিড়ছে না কয়লার জাহাজ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা নদীর তীরে কয়লা ভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাবনাবাদ চ্যানেল ব্যবহার করেই এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি ও কয়লা পরিবহন করা হয়। এক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর কর্মপরিকল্পনা রাবনাবাদ চ্যানেলকে ঘিরেই। কিন্তু ম্যানটেইনেন্স ড্রেজিং না থাকায় নাব্যতাসংকটের মুখে পড়েছে চ্যানেলটি। এতে বাড়ছে পরিবহন খরচ, আর প্রভাব পড়ছে বিদ্যুতের দামেও।
আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি রয়েছে উৎপাদনে, আরেকটি উৎপাদনের অপেক্ষায় এবং বাকিটা নির্মাণাধীন। এ তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা পরিবহনের চ্যানেলে নাব্যতাসংকট থাকায় বড় কোনো জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারে না। বড় জাহাজ চলাচলের জন্য চ্যানেলের গভীরতা ৮.৭ মিটার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমানে জোয়ারের সময় এর গভীরতা ৬.৫ এবং ভাটার সময় ৫.৯ মিটারের নিচে থাকে।
চ্যানেলের গভীরতা নিয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পায়রায় নির্মাণাধীন অন্য কেন্দ্রগুলোতেও। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু নাহলে বিপাকে পড়তে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, লাইটারিংয়ের মাধ্যমে কয়লা খালাস করতে গিয়ে বাড়ছে পরিবহন খরচ। আবার এর প্রভাব পড়ছে বিদ্যুতের দামেও। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাপিটাল ড্রেজিং শুরু নাহলে ভোগান্তি আরো বাড়বে।
তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ জানান, দেশের মোট বিদ্যুতের দশ শতাংশ পায়রার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পূরণ করছে। এজন্য প্রতিমাসে তিন লাখ মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হয়। এ কয়লা ইন্দোনেশিয়া থেকে সমুদ্রপথে আনতে হয়। জাহাজে পুরোপুরি লোডিং করে কয়লা আনতে হলে চ্যানেলে ১৩ থেকে ১৪ মিটার গভীরতা প্রয়োজন। কিন্তু শীতের সময় এটি পাঁচ মিটারের নিচে নেমে যায়।
পায়রা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বেলজিয়ামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জান ডি নুল’ ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে রাবনাবাদ চ্যানেলের গভীরতা সাড়ে দশ মিটার করার লক্ষমাত্রা নিয়ে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করে। কাজ শেষে ২০২৪ সালে ২৬ এপ্রিল পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে চ্যানেলটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ম্যানটেইনেন্স ড্রেজিং করা হলেও তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই নতুন করে ম্যানটেইনেন্স ড্রেজিং করে এর গভীরতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানান বন্দর চেযারম্যান। এর মাধ্যমে রাবনাবাদ চ্যানেলের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হলে পায়রা বন্দরের গতি ফিরে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র: সময় টিভি
ON/ARF