ফারাজ করিমের বাবাসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৯ বছর আগে বিএনপির এক সমর্থককে আটকের পর গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও রাউজান থানার তৎকালিন ওসি (মেজর সিনহা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৩৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সহিদুল ইসলামের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কামরুল হাসান টিটু।
মামলাটি রাউজান থানার ওসিকে এফআইআর বা এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার আদেশ দেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চিফ জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পেশকার জয়নাল আবেদীন। মামলাটি সোমবার দায়ের হলেও জানা গেছে মঙ্গলবার।
কামরুল হাসান টিটু রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- রাউজান থানার তৎকালীর ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, এসআই টুটুল মজুমদার, থানার তৎকালীন কনেষ্টবল (কং ২৪৭১) মোহাম্মদ তৌহিদ, কনেস্টবল (কং ১৬৭১ রাজীব চন্দ্র দাশ, কনেস্টবল (১৫৭২) আবদুল গফুর।
অন্য আসামিদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
বাদি মামলার উল্লেখ করেছেন, বাদী বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম কামরুল হাসান টিটুকে তার মেয়ের বাড়ি বোয়ালখালী থানার ফকিরাখালী এলাকা থেকে সাদা ও পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা তাকে আটক করে। কালো মাইক্রোবাস করে তুলে নিয়ে কয়েক ঘন্টা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে বিকাল ৫টার দিকে নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়। ওইদিন দিবাগত রাত ২টার দিকে রাউজান থানার তৎকালিন এসআই টুটুল মজুমদার ও কনেস্টবল তৌহিদ ও রাজীব ভিকটিম কামরুল হাসানকে চোখ বেঁধে ও হ্যান্ডকাপ পরিয়ে আবার কালো মাইক্রোবাসে তুলে। রাউজান উপজেলার মাস্টারদা সূর্যসেন বাড়ির পাশে নিয়ে ৩টা ৩০ মিনিটে ছুরিকাঘাতে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল হাড়সহ কেটে ফেলে ও হাতুরি দিয়ে বাড়ি মেরে বাম হাতের সব হাড়গুড়ো করে দেয়। একইভাবে ছুরিকাঘাতে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও হাড়সহ গুড়ো করে দেয়। এর কয়েক মিনিট পর এসআই টুটুল মজুমদার বাদির বাম পায়ে রানে রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি করে। অপর দুই আসামি সেকান্দর ও এমরান ডান পায়ে শর্টগান ও রাইফেল দিয়ে কয়েকটি গুলি করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর তার পরিবারের স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ পাহারায় ৪ মাস ৮দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর পুলিশ একটি অস্ত্র আইনে ও একটি বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করে কারাগারে পাঠায়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কারা কৃর্তপক্ষ তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তান ডান পা কেটে ফেলা হয়। চিকিৎসা শেষে আবার তাকে চট্টগ্রামে কারাগারে নিয়ে আসা হয়। পরে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে কারামুক্ত হন কামরুল হাসান টিটু।
কক্সবাজারে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন কক্সবাজারের একটি আদালত। দীর্ঘদিন ধরে ওসি প্রদীপ গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারেই রয়েছেন।
সুত্র: প্রথম আলো
ON/RMN