তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে উত্তাল উত্তরাঞ্চল

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য বণ্টন ও তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তরাঞ্চলের পাঁচটি জেলায় ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শুরু হয়েছে। রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে হাজার হাজার মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রংপুর ও লালমনিরহাটের তিস্তা রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন চর পয়েন্ট থেকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দুই দিনের এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর শুরু হয় পদযাত্রা, সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। টানা ৪৮ ঘণ্টার এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা তাবু বসিয়ে রাত্রি যাপন করছে এবং দেশীয় সংগীত, নৃত্য ও খেলাধুলার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, ভারতের উজানে তিস্তা নদীর পানি আটকে দেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে নদী শুকিয়ে যায় এবং বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ঘরবাড়ি ধসে পড়ছে এবং অনেক মানুষ বাস্তুহারা হচ্ছে। এই সংকট নিরসনে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে।
কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে তিস্তা নদীর তীরে মানুষের ঢল আরও বেড়েছে। আন্দোলনস্থলজুড়ে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে। তিস্তা রেলসেতুর নিচে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে।
তিস্তা রক্ষা আন্দোলন শুধু নদী রক্ষার নয়, এটি প্রকৃতি, কৃষি ও মানুষের জীবিকা রক্ষার লড়াই বলেও আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন। আন্দোলনের আয়োজক কমিটি অংশগ্রহণকারীদের জন্য দুই দিনের খাবারের ব্যবস্থা করেছে। আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষদের চোখে-মুখে লড়াইয়ের দৃঢ় প্রত্যয় ফুটে উঠেছে। তাদের প্রত্যাশা, এই আন্দোলনের মাধ্যমে তিস্তা আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
–সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট
–ON/SMA