রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহযোগিতা বাড়াল দ. কোরিয়া
জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে (ডব্লিউএফপি) ২০ লাখ মার্কিন ডলারের একটি নতুন অনুদানের মাধ্যমে সহযোগিতা বাড়িয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
এই সময়োপযোগী অর্থায়নের ফলে ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় ৭৬ হাজার রোহিঙ্গাকে সহায়ত এবং তাদের জন্য দু’মাসের জন্য মাথাপিছু ১২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলারের সম্পূর্ণ রেশন সরবরাহ করতে সক্ষম হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক বলেছেন যে তাদের চাল অনুদান জুলাই ও আগস্টে দেয়ার পাশাপাশি এই সাম্প্রতিক অবদানে অনেক রোহিঙ্গা পরিবার তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমরা আশা করি, আরো অংশীদাররা তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবেন।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডব্লিউএফপির রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমে ধারাবাহিকভাবে অবদান রেখে চলেছে।
চলমান চাহিদা সত্ত্বেও মানবিক অংশীদাররা তহবিল ঘাটতির সম্মুখীন হওয়ায় সহায়তা কমাতে বাধ্য হচ্ছে। ২০২৩ সালে খাদ্য রেশন মাথাপিছু ১২ মার্কিন ডলার থেকে মার্চ মাসে ১০ মার্কিন ডলারে এবং জুনে আট মার্কিন ডলারে কমিয়ে আনা হয়।
রেশন কমানোর পর ডব্লিউএফপির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা পরিবারের মধ্যে খাদ্য গ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে এবং বৈশ্বিক তীব্র অপুষ্টি অথবা গ্লোবাল একিউট ম্যলনিউট্রিশন (জিএএম) ১৫ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৫ শতাংশ জরুরি সীমা ছাড়িয়ে গেছে এবং ২০১৭ সালের সঙ্কটের পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। এছাড়া ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড, জলবায়ুজনিত ঝুঁকি (যেমন বন্যা ও ভূমিধস) এবং নিরাপত্তাহীনতার মতো ঘন ঘন বিপর্যয় রোহিঙ্গাদের দুর্বলতাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় ডব্লিউএফপি ২০২৪ সালের শুরুতে এবং আগস্টে রেশন বাড়িয়ে মাথাপিছু ১২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার পুনর্বহাল করেছে। প্রথমবারের মতো সাহায্য প্যাকেজে পুষ্টিসমৃদ্ধ চালও যোগ করা হয়েছে। আগামী বছর পর্যন্ত পূর্ণ রেশন এবং অন্যান্য কার্যক্রম চালিয়ে যেতে ডব্লিউএফপির প্রায় আট কোটি মার্কিন ডলার তহবিল প্রয়োজন।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কাল্পেলি বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার অবদান সময়োপযোগী এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের জীবন বাঁচাতে এবং রোহিঙ্গাদের ক্ষুধা লাঘব করতে সহায়তা করেছে।’
তিনি এই কঠিন সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া ও কোরিয়ার জনগণের সহানুভূতি ও সংহতির জন্য ধন্যবাদ জানান।
সুত্র: নয়া দিগন্ত
ON/RMN