বাইডেনের ক্ষমায় জীবন বাঁচল দুই টার্কি মুরগির
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার তাঁর শেষ থ্যাংকসগিভিং ডে উদ্যাপন করতে যাচ্ছেন জো বাইডেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপনের দিবসটি উদ্যাপনকে সামনে রেখে একটি অনুষ্ঠানে দুই টার্কি মুরগি পিচ ও ব্লসমকে ক্ষমা করলেন তিনি। এই দিবসে টার্কিকে ক্ষমা করে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইতিহাসের প্রায় এক দশকের পুরোনো ঐতিহ্য।
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ লনে টার্কি দুটিকে ক্ষমা করেন বাইডেন।
এ অনুষ্ঠানে ২ হাজার ৫০০ অতিথির উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেন বাইডেন। তিনি বলেন, টার্কিগুলোর নাম তাঁর নির্বাচনী অঙ্গরাজ্য ডেলাওয়ারের স্থানীয় ফুল পিচ ব্লসমের নামে পিচ ও ব্লসম রাখা হয়েছে, যা স্থিরতা ও দৃঢ়তার প্রতীক।
বাইডেন জানান, পিচের ওজন ৪১ পাউন্ড (১৯ কেজি)। টার্কিটি মাংস, আলু, শাকসবজি দিয়ে তৈরি খাবার হট ডিশ, রসুন, আলু, ময়দা দিয়ে বানানো টেটার টটস খেতে পছন্দ করে। সে নর্দার্ন লাইটস দেখতে ভ্রমণে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে।
অন্যদিকে, ব্লসমের ওজন ৪০ পাউন্ড (১৮ কেজি)। এটির পছন্দের খাবার চিজ কার্ডস। এটি নাকি বক্সিং ম্যাচ দেখতেও পছন্দ করে!
টার্কিকে ক্ষমা অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, ‘ওয়াশিংটনের ছুটির মৌসুম শুরু হয় থ্যাংকসগিভিং ডে দিয়ে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষবারের মতো এখানে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি। এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। এর জন্য আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘আজ আমার স্ত্রী জিলকে নিয়ে আমি নিউইয়র্কের স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে যাব। সেখানে কোস্টগার্ডের সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফ্রেন্ডসগিভিং–এ অংশ নেব। তাঁদের সেবা ও ত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব। একই সঙ্গে, আমরা তাঁদেরও স্মরণে রাখছি, যারা অনেক কিছু হারিয়েছেন। আমাদের হৃদয়ে তাঁদের স্থান এবং তাঁদের সম্মানে থ্যাংকসগিভিং ডিনারে একটি চেয়ার খালি থাকবে।’
ক্ষমা পাওয়া টার্কিগুলোকে পরে খামারে পাঠানো হয়। সেখানে তারা মুক্তভাবে বাঁচবে। দ্য ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন জানিয়েছে, পিচ ও ব্লসমকে মিনেসোটার খামার আমেরিকা এগ্রিকালচার ইন্টারঅ্যাকটিভ সেন্টারে পাঠানো হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে ১৯৪৭ সাল থেকে টার্কি মুরগি সরবরাহ করে আসছে দ্য ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার থ্যাংকসগিভিং ডে উদ্যাপন করা হয়। এ দিন আস্ত টার্কি মুরগি রোস্ট করা হয়। এই প্রথা অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টদের টার্কি উপহার দেওয়ার ঐতিহ্য শুরু হয় ১৮৭০–এর দশক থেকে। রোড আইল্যান্ডের পোলট্রি ব্যবসায়ী হোরেস ভোস প্রেসিডেন্টকে টার্কি পাঠানো শুরু করেন।
হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন অনেক বাসিন্দা টার্কি খেতেন না। তবে এই প্রথার প্রতি সম্মান জানিয়ে টার্কি গ্রহণ করলেও সেটি রান্নার জন্য না পাঠিয়ে ‘ক্ষমা’ করে দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের সময় থেকে হোয়াইট হাউসে টার্কি প্রদর্শন এবং খামারে পাঠানোর রীতি আরও জনপ্রিয় হয়। ১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের সময় থেকে টার্কিকে ক্ষমার বিষয়টি আনুষ্ঠানিক রূপ পায়।
এই রীতির মাধ্যমে কৃতজ্ঞতার বার্তা ছড়ানো হয় এবং আসন্ন ছুটির আনন্দ উদ্যাপনের সূচনা হিসেবে চিহ্নিত হয়। টার্কিগুলোকে ক্ষমা করে দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়, যা এদের জন্যও প্রতীকী ছুটি!
সূত্র : আজকের পত্রিকা
on/abr