ফাস্ট ফুড খেয়ে তোপের মুখে ডোনাল্ড ট্রাম্প!
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়ে ভুয়া তথ্যের প্রচারক রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র। তাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী করার ঘোষণা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাবারের উপাদান বাদ দিয়ে আমেরিকাকে আবার স্বাস্থ্যবান করে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করবেন কেনেডি।
গত বৃহস্পতিবার এক্সে এক পোস্টে ট্রাম্প আরও বলেন, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, দূষণকারী পদার্থ, কীটনাশক, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য ও খাদ্য সংযোজনকারী থেকে জনগণকে রক্ষার মাধ্যমে আমেরিকাকে আবার মহান করতে সহায়তা করবেন তার এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
কেনেডিকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে স্বাস্থ্যকর জীবন উপহার দেওয়ার অঙ্গীকারের পর তিন দিনও যায়নি। এরই মাঝে ট্রাম্প এই কেনেডিকে নিয়েই অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছেন, যা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় চলছে ব্যাপক সমালোচনা। ট্রাম্পকে ‘প্রতারক’ বলে গালাগালও করা হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের ইনস্টাগ্রামে দেওয়া একটি ছবি নিয়ে। ওই ছবিতে দেখা যায়, একটি উড়োজাহাজে ট্রাম্প, তার বড় ছেলে, কেনেডি ও টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক বেশ মজা করে ম্যাকডোনাল্ডসের বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ও কোক খাচ্ছেন।
ছবির শিরোনামে লেখা ছিল, “কাল থেকে আমেরিকাকে আবার স্বাস্থ্যবান করার কাজ শুরু হবে।”
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ফাস্ট ফুড ও ডায়েট কোলার প্রতি গোপন প্রেম ট্রাম্প কখনোই লুকাতে পারেন না।
এমনকি গত অক্টোবরে পেনসিলভেনিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় একটি ফাস্ট ফুডের রেস্তোরাঁয় অল্প কিছুক্ষণের জন্য থামার লোভ তিনি সংবরণ করতে পারেননি।
রেস্তোরাঁর কর্মীদের ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি লবণ বড্ড ভালোবাসি!”
এই অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে কেনেডির নাম ঘোষণা করার সময় ট্রাম্প বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শিল্প খাদ্য প্রতিষ্ঠান ও ওষুধ কোম্পানিগুলোর চাপে পিষ্ট আমেরিকানরা।
তার সঙ্গে একমত ৭০ বছর বয়সী কেনেডি। তিনিও বেশ কয়েকবার বলেছেন, খাদ্য শিল্প আমেরিকানদের গণহারে বিষাক্ত করছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে জাতীয় খাদ্যতালিকা থেকে উচ্চমাত্রার চিনি, চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে স্থূলতার মহামারি মোকাবেলা করার কথাও বারবার বলেছেন কেনেডি।
শুধু তাই নয়, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফাস্ট ফুড প্রীতির সমালোচনা করে এক পডকাস্টে কেনেডি বলেন, “তিনি যা খান, তা আসলেই খারাপ।
“ফাস্ট ফুড স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই উপকারী নয়। ট্রাম্প উড়োজাহাজে যে খাবার খান, তা তো রীতিমতো বিষ।”
ট্রাম্পের উড়োজাহাজে খাওয়া খাবার নিয়ে সমালোচনা করলেও শেষ পর্যন্ত কেনেডি তার সঙ্গে উড়োজাহাজে বসেই বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ের মতো ক্ষতিকর ফাস্ট ফুড খেলেন।
কেনেডির কথার সঙ্গে কাজের মিল না দেখে নেটিজেনরা সমালোচনা করে বলছেন, ম্যাকডোনাল্ডসের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ে রয়েছে বীজ তেল। এই বিষাক্ত উপাদানকে আমেরিকার খাদ্য সরবরাহ থেকে বাদ দিতে চান কেনেডি। এখন তিনিই এই বীজ তেলযুক্ত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাচ্ছেন।
তাদের একজন বলেছেন, “তিনি বীজ তেল খাবেন আর আমাদের বলবেন, এটা খেও না, ক্ষতিকর। বিষ তো তিনি নিজেই খাচ্ছেন!”
সূত্র: সকাল-সন্ধ্যা
ON/ORNB