বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’-এর ‘দুর্গা’ পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে
দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন উমা দাশগুপ্ত। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে নির্মিত ছবিতে উমা অভিনয় করে পেয়েছেন বিশ্বখ্যাতি। আজও ‘পথের পাঁচালী’ নামটা শুনলেই সেই কাশবনের মধ্য দিয়ে অপু-দুর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়ার দৃশ্যটিই চোখে ভেসে ওঠে। আর সেই দুর্গাই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথে পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের ‘দুর্গা’ চরিত্রে অভিনয় করা উমা দাশগুপ্ত আর নেই। আজ সোমবার সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ সেই দৃশ্যের কথাই বলছিলেন ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের ‘অপু’।
দুর্গার ছোট ভাই ‘অপু’র চরিত্রে অভিনয় করা সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,
আজকে বেশি করে ‘পথের পাঁচালী’র শুটিংয়ের দিনগুলো মনে পড়ছে। আমার তখন মাত্র ৯ বছর বয়স। আর উমাদির ১৪ বছর। আমি তো শুটিংয়ের কিছুই বুঝতাম না। একসঙ্গে দু’জনে শুটিং করেছি।
গড়িয়ার বোড়ালে শুটিং। ট্রেন দেখতে যাওয়ার দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল শক্তিগড়ের কাছে পালসিটে। আমাকে শুরু থেকে আগলে রাখতেন দিদি। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, খুনসুটি করতাম আমরা, ঠিক যেন ভাই-বোনের মতো। ছবির মতোই শুটিংয়েও তিনি যেন আক্ষরিক অর্থেই আমার দিদি ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন উমা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পথের পাঁচালী’ অবলম্বনে নির্মিত ছবিতে উমা অভিনয় করে পেয়েছেন বিশ্বখ্যাতি।
একটি ছবিতে অভিনয় করেই বিশ্বজোড়া খ্যাতি পাওয়া উমা ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের কিশোরী দুর্গা চরিত্রকে পর্দায় যেন জীবন্ত করে তুলেছিলেন। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক। শৈশব থেকেই থিয়েটার করতেন উমা দাশগুপ্ত। যে স্কুলে পড়তেন, সেখানকার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিচয় ছিল। আর সেই শিক্ষকের সুবাদেই দুর্গা চরিত্রের জন্য তাঁকে খুঁজে নিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। তবে উমার বাবা চাননি মেয়ে অভিনয়ে আসুক। তবে শেষ পর্যন্ত বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। পরবর্তীতে হাতে গোনা কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছিলেন উমা দাশগুপ্ত। কিন্তু বাঙালির কাছে তিনি সেই দুর্গা হয়েই থেকে গিয়েছেন।
সূত্র : THE BUSINESS STANDARD
ON / MLY