আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে এই কমিটি গঠন করতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসচিবের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কমিটি গঠনের পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে আদালতে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ওই চুক্তির বৈধতা নিয়ে করা রিট ও সম্পূরক আবেদনের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার রুলসহ এই আদেশ দেন। পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
হাইকোর্ট আদানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের আগে দর-কষাকষি হয়ে থাকলে সে–সংক্রান্ত কাগজ ও তথ্যাদি ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের আদেশ গ্রহণ করার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যানকে এসব তথ্য দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ওই চুক্তি সম্পাদনে যথাযথভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কি না, তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম আবেদনকারী হয়ে ১২ নভেম্বর রিট করেন। রিটে বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য আদানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বরের চুক্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ বিষয়ে রুল চাওয়ার পাশাপাশি রুল হলে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়। রিটটি গতকাল সোমবার কার্যতালিকায় ওঠে। আদালত আজ শুনানির জন্য দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় রিটটি আজ শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ১৮ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
রিট দায়ের করার পর সম্পূরক একটি আবেদন দাখিল করেন আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম। গতকাল তিনি একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে, আমাদের সরকার ভারতের অন্যান্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ অনেক কম টাকায় পায়। ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে যে বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়, দর প্রতি ইউনিট হিসাবে ৫ দশমিক ৫ পয়সা পড়ে। ভারতের অন্যান্য বেসরকারি খাত থেকে বাংলাদেশ যে বিদ্যুৎ নেয়, তার খরচ ইউনিট প্রতি ৮ টাকা ৫০ পয়সা করে পড়ে। অথচ আদানির কাছ থেকে নিতে ১৪ টাকার ওপরে ইউনিটপ্রতি খরচ পড়ে। এমনকি নেপাল থেকে আনতে মোট খরচ পড়ছে মাত্র ৮ টাকা। আদানির সঙ্গে চুক্তির ক্ষেত্রে দর–কাষাকষি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয়নি বলে গণমাধ্যমে দেখেছি। যে কারণে আদৌ দর–কষাকষি হয়েছে কি না, হলে কীভাবে হয়েছে, এ-সংক্রান্ত তথ্য আদালতে দাখিল করার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে সম্পূরক আবেদনে।’
সূত্র: প্রথম আলো
ON/ARF