বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে স্মার্ট কার্ড ব্যবসা: প্রতারিত সাধারণ মানুষ

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটিতে বিনামূল্যে বিতরণ করা স্মার্ট কার্ড পেয়ে সাধারণ মানুষকে পাশেই বসা একদল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী লেমিনেটিং ও কাভারের নামে বাড়তি টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ১২ ডিসেম্বর থেকে ডোমার উপজেলার ভোটারদের মাঝে সরকার নির্ধারিত বিনামূল্যে স্মার্ট কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) বিতরণ করছে উপজেলা নির্বাচন অফিস। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর শুরু হওয়া কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায়) চিলাহাটির কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্ড বিতরণ করা হয় চান্দখানা জি.আর উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে।
অভিযোগ রয়েছে, যেখানে উপজেলা নির্বাচন অফিস বিনামূল্যে উন্নতমানের স্মার্ট কার্ড দিচ্ছে, সেখানে বিদ্যালয় মাঠের পাশে অস্থায়ী বুথ বসিয়ে একটি চক্র কার্ড লেমিনেটিং বাবদ ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং কাভারের জন্য ৫০ থেকে ৮০ টাকা আদায় করছে। অথচ স্থানীয় দোকানগুলোতে লেমিনেটিং করতে খরচ পড়ে ২০ টাকা এবং কাভার ৩০ থেকে ৪০ টাকা। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কার্ড হাতে পাওয়া মাত্রই ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ‘ভালো থাকবে’ বলে লেমিনেটিং ও কাভার নিতে বাধ্য করছে।
সাধারণ মানুষের একাংশ এ বিষয়ে বলেন, ‘ভাই, কার্ডটা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে আমাকে দোকানদাররা এসে বলেছে যে, লেমিনেটিং করে নিন, লেমিনেটিং করানোর পর বলেছে কার্ডটা ভালো থাকবে, এই কাভারটা নিন। এতে খরচ নিয়েছে ৮০ টাকা, কারো কার্ডে ১০০ টাকা, আমরাও দিয়েছি। আমরা আর কী করবো, মনে করেছি এখান থেকে নিলে ভালো হবে, আমরাও এটা করেছি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ সংযোগও বিদ্যালয় থেকে নিয়ে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে চান্দখানা জি.আর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক মুঠোফোনে জানান, ‘আমরা বিদ্যালয় থেকে এসব কাজের জন্য কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ দিইনি।’
কেতকীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম রোমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে বিনামূল্যে যে উন্নতমানের স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে, তা সহজে নষ্ট হয় না। সাধারণ মানুষকে বোঝানো সত্ত্বেও যদি তারা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে লেমিনেটিং ও কাভার কেনে, সেটি তাদের ব্যর্থতা।’
জানা গেছে, গত ১২ থেকে ১৫ ডিসেম্বর ভোগডাবুরী ইউনিয়নের স্মার্ট কার্ড বিতরণের সময়ও একই পদ্ধতিতে মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়েছিল, তখনও বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়েছিল।
-রাকিবুল হাসান, ডোমার, নীলফামারী
ON/RMN