পাট চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে, সোনালী আঁশে নতুন প্রাণ

পাটের দাম বৃদ্ধি এবং পলিথিন নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে কৃষকরা আবারও সোনালী আঁশ চাষে মনোযোগী হয়ে উঠেছে। বর্তমানে, লালমনিরহাটসহ রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলায় পাটের চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরে পাটের উৎপাদন ৯৫৪৮ মেট্রিক টন হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন জানান, চলতি বছরে ৩ হাজার ৯ শত ৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে এবং উৎপাদন ছিল ৯৫৪৮ মেট্রিক টন, যা গত বছর ছিল ৯৭১৮ মেট্রিক টন। এছাড়া, রংপুর বিভাগের পাঁচটি জেলায় ৫৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৪ বেল পাট।
রংপুর ডিএই তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রংপুর বিভাগে প্রায় ৭০ হাজার কৃষক পাট চাষ করেছেন। গত ১০ বছরে পাট চাষে প্রায় ৪০% কমেছে, এবং ২০ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে এ অঞ্চলে ৭০% পাট চাষ কমেছে।
এদিকে, কৃষকরা পাট চাষের জন্য ভালো দাম পাচ্ছেন। বর্তমানে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকায়, যা গত বছর ছিল ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা। তবে, পাট চাষে কিছু সমস্যা রয়েছে। কৃষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘পাটের দাম যাই হোক না কেন, আমার জমিগুলো নিচুতে তাই আমাকে পাট চাষ করতেই হয়। তবে, ভালো দাম পেয়েছি, আশা করি সামনের বার আরও বেশি পাবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু কষ্টের বিষয় হলো চাষাবাদ করি, কিন্তু সার টাকা দিয়েও পাচ্ছিনা।’
লালমনিরহাটের ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান বলেন, ‘গত এক থেকে দেড় মাসে পাট কেনার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এত কল পেয়েছি, যা কল্পনার বাইরে। চাহিদা বেশি হওয়াতে উচ্চ মূল্যে পাট কিনে তা দেশের বিভিন্ন জায়গার পার্টিদের সাপ্লাই দিয়েছি।’
বিশেষজ্ঞরা জানান, ফিতা কাটিং পদ্ধতিতে পাট চাষ করলে পানির পরিমাণ কম লাগে, তবে কৃষকরা ঐতিহ্যগত পদ্ধতি সহজ মনে করে তাই ফিতা কাটিং পদ্ধতিতে আগ্রহ কম।
পাট চাষে সমস্যা হচ্ছে তিস্তা নদীর পানির সঠিক বণ্টন এবং বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন, যা বৃষ্টিপাতের অনিয়মিততা সৃষ্টি করছে। এসব কারণে পাট সহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
-সাব্বির হোসেন
ON/RMN