২৪ যুবককে লিবিয়ার জিম্মিদশা থেকে ফিরে পেতে স্বজনদের মানববন্ধন

শরীয়তপুর এবং মাদারীপুরের ২৪ জন তরুণ ও যুবক গত মার্চ মাসে দালালের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়লেও ৯ মাস পরও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনরা জানান, তারা ইতালি পৌঁছাতে পারেননি, বরং লিবিয়ায় মানব পাচারের শিকার হয়ে নির্যাতিত হয়েছেন। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন পরিবারগুলো রোববার (৮ ডিসেম্বর) শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে এবং স্মারকলিপি দিয়েছে।
গত মার্চ মাসে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের ১৯ জন এবং মাদারীপুরের ৫ জন তরুণ দালালদের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার জন্য বের হন। কিন্তু তাদের না পৌঁছানোর কথা বলে লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে চক্রটি তাদের জিম্মি করে ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে এবং নানা সময় লাখ লাখ টাকা আদায় করে। এরপরও তাদের মুক্তি মেলেনি।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের চরযাদবপুর গ্রামের রাশেদ খান তার সহযোগীদের মাধ্যমে স্থানীয় ২৫ তরুণকে অবৈধভাবে লিবিয়া হয়ে ইতালি পাঠানোর জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যান। তাদের পরিবারের কাছ থেকে ১২ থেকে ২০ লাখ টাকা আদায় করা হয়।
প্রথমে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিসর হয়ে তাদের লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কিছু তরুণ পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলেও যান। তবে ২১ ও ২২ মার্চ থেকে এই ২৪ জনের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। দালাল রাশেদ এখন পালিয়ে আছেন এবং তার অফিসও বন্ধ।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আল আমিন ভূঁইয়ার বাবা চুন্নু ভূঁইয়া বলেন, ‘মাফিয়ারা কয়েক দফায় ২৮ লাখ টাকা নিয়েছে। আমি সহায় সম্বল বিক্রি করে টাকা দিয়েছি, কিন্তু এখনো জানি না আমার ছেলে কোথায় আছেন।’ একইভাবে সিরাজ মৃধার স্ত্রী আয়েশা আক্তার জানান, তার স্বামীকে বাঁচাতে জমি-বাড়ি বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন, কিন্তু তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মানব পাচারের ঘটনা সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দায়ের করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ছায়া তদন্ত শুরু করা হবে।’
-মোঃ জামাল হোসেন, নড়িয়া
ON/RMN