কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা, দিনমজুরদের দুর্ভোগ চরমে

দেশের সর্বোত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় পুরো জেলা ঢেকে গেছে, যার ফলে বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুর এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের তাপমাত্রা বর্তমানে ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এসেছে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো দেখা মেলা ভার। শীতের তীব্রতা রাতের দিকে আরও বাড়ছে।
এদিকে, শীতজনিত রোগের প্রকোপও বাড়ছে। জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষত, শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং নিউমোনিয়ার মতো সমস্যা নিয়ে অনেকেই হাসপাতালে আসছেন।
শীতবস্ত্রের অভাবে দুঃস্থ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে। জেলার নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ি, চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর, উলিপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় দরিদ্ররা শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে চেষ্টা করছেন। গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় তাদের কষ্ট বেড়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি।
এদিকে, কৃষকদের মধ্যে শীতের প্রকোপ নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম (৪৭) বলেন, ‘যেভাবে শীতের প্রকোপ বাড়ছে এবং কুয়াশা ঢাকা এলাকা হয়ে যাচ্ছে, তাতে বোরো ধানের বীজতলা রক্ষায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়বে। এতে বীজ সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’ এছাড়া, কুয়াশার কারণে আলু ও সরিষার মতো ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
কুড়িগ্রামের শীতার্ত মানুষের সাহায্যার্থে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিজ্ঞজনরা। তারা বলেন, ‘দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে সচেতন করা প্রয়োজন।’
কুড়িগ্রামের শীতকবলিত মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারি উদ্যোগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। এসব উদ্যোগ শীতার্ত মানুষের কিছুটা কষ্ট লাঘব করতে সাহায্য করবে।
-জাহিদ খান,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
ON/RMN