কৃষকের আঙিনায় নবান্নের ঘ্রাণ

চিলাহাটিতে মাঠভরা সোনালি ধানে নবান্ন উৎসবের আবাহন শুরু হয়েছে। অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ফসল ঘরে তোলার সময় বাংলার কৃষকরা এই উৎসব উদ্যাপন করেন। নবান্ন মানে নব অর্থাৎ নতুন অন্ন। ফসল ঘরে তোলা উপলক্ষ্যে গ্রামবাংলায় নবান্ন উৎসব এক ঐতিহ্যবাহী আয়োজন।
বাংলাদেশের অন্যতম ঋতুভিত্তিক এই উৎসব মূলত আমন ধান কাটার পর পালন করা হয়। নতুন ধানের চাল দিয়ে পায়েস, পোলাও, পিঠা-পুলির মতো খাবার তৈরি করে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের আমন্ত্রণ করা হয়। মুসলিম কৃষক সমাজে নতুন ফসল ঘরে তোলার জন্য মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কোরানখানি, মিলাদ এবং মসজিদে শিরনি বিতরণ করা হয়।
অন্যদিকে, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নতুন অন্নকে লক্ষ্মীতুল্য মনে করে। এই উপলক্ষ্যে লক্ষ্মীপূজা এবং পিতৃপুরুষ, দেবতা ও কাঁককে অন্ন উৎসর্গ করার প্রথা প্রচলিত। এ প্রথার অংশ হিসেবে কলার ডোগায় চাল, কলা, নারকেল নাড়ু দিয়ে কাককে নিবেদন করা হয়। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, কাকের মাধ্যমে এ অন্ন মৃতের আত্মার কাছে পৌঁছে।
বরিশাল অঞ্চলে ‘বীরবাশ’ নামে একটি প্রথা প্রচলিত আছে, যেখানে উঠানের মাঝে বাঁশ পুঁতে দুধ ও কই মাছ উৎসর্গ করা হয়।
নবান্ন উৎসবের সঙ্গে বাঙালির ঐতিহ্যগত নানা আচার-অনুষ্ঠান এবং বিশ্বাস জড়িয়ে আছে। আগে এ উৎসব মাসব্যাপী উদ্যাপন করা হলেও এখন তা সীমাবদ্ধ হয়ে আসছে।
-রাকিবুল হাসান, নীলফামারী
ON/MRF