রায়পুরায় লালন ভক্তদের দুই দিনব্যাপী সাধু সঙ্গ মেলা অনুষ্ঠিত
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার খানাবাড়িতে লালন ভক্তদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী ‘সাধু সঙ্গ’ বাউল মহোৎসব ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অগ্রহায়ণের ১০ ও ১১ তারিখে ফকির লালন সাঁইজির তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে গত ৪০ বছর ধরে এই আয়োজন হয়ে আসছে।
এবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক লালন ভক্ত ও বাউল শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। প্রথম রাতেই মঞ্চে শুরু হয় লালন সাঁইজির জনপ্রিয় গান ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ সহ ৫০টিরও বেশি আধ্যাত্মিক বাণী সম্বলিত গান। কুষ্টিয়া, ঢাকা ও আশেপাশের জেলা থেকে আগত বাউল শিল্পীরা গানের পরিবেশনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে বাউল শিল্পীদের মধ্যে ছিল সমন কালী, তানার আলম, নয়ন সাধু, সহিদুল, সোনিয়া, দুলাল নজরুল প্রমুখ। বাদ্যযন্ত্রে সঙ্গীত পরিবেশন করেন নয়ন ঢোলি, সান্টু বাউল, হুমায়ুন দোতরায়, এবং রানার বাঁশি।
রবিবার থেকেই ভক্ত আশেকানরা হুমায়ুন ফকিরের আখড়াবাড়িতে সমবেত হন। তাঁরা অস্থায়ী তাঁবু গেড়ে আলাদা আলাদা আস্তানায় জিকির, সঙ্গীত পরিবেশনা এবং আড্ডায় অংশ নেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ফজলু মিয়া বলেন, ‘হুমায়ুন ফকির ছিলেন পাকিস্তান আমলের একজন সেনা কর্মকর্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। চাকরি শেষে তিনি মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং লালন সাঁইজির অনুসরণে আধ্যাত্মিক জীবনধারা গ্রহণ করেন।’
একজন বাউল ভক্ত বলেন, ‘গুরু হুমায়ুন ফকির বলতেন, “জিকিরে জিকিরে খোদাকে পাওয়া যায়।” তার দেখানো পথে আমরা চলার চেষ্টা করি। প্রতিবছর এই মেলায় এসে সবার সাথে মিলিত হতে ভালো লাগে।’
এছাড়া গ্রামীণ মেলায় স্থানীয় ও দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। মেলা দেখতে আসা এম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ মেলা শুধু লালন ভক্তদের জন্য নয়, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের আনন্দের উৎস। প্রতি বছর এ আয়োজনের অপেক্ষায় থাকি।’
-হারুনুর রশিদ, রায়পুরা
ON/MRF