লালমনিরহাটে রবি মৌসুমের শুরুতেই সারের সংকট, কৃষকদের হতাশা

লালমনিরহাটে চলতি রবি মৌসুমের শুরুতেই সারের সংকট দেখা দিয়েছে। নভেম্বর মাসের বরাদ্দকৃত সারের মাত্র ২০-২৫ শতাংশ বাফার গুদামে পৌঁছেছে, ফলে আলু, ভুট্টা, সরিষা ও গম চাষে চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) থেকে কোনো সার বরাদ্দ না পাওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
কৃষকরা জানান,
রবি মৌসুমে জমিতে সারের চাহিদা বেশি থাকে। পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ভুট্টা বীজ বুনন ও আলু রোপণের সময় এই সংকট চাষাবাদে বাধা সৃষ্টি করছে। সারের অভাবে চাষিদের বাধ্য হয়ে অনিবন্ধিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে উচ্চমূল্যে সার কিনতে হচ্ছে।
হাতীবান্ধার ভুট্টাচাষি আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভুট্টা চাষাবাদ শুরু হতেই বাজার থেকে সার উধাও হয়েছে। গোপনে বেশি টাকা দিলে সার মিলছে। ডিলাররা সরবরাহ নেই অজুহাতে সার দিচ্ছে না। বাংলা টিএসপি ১৩৫০ টাকার স্থলে ১৫০০ টাকা এবং বাংলা ডিএপি ১০৫০ টাকার স্থলে ২০০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’
অন্যদিকে, তামাক চাষের জন্যও প্রয়োজনীয় সার বরাদ্দের অভাবের অভিযোগ উঠেছে। আদিতমারীর কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘তামাক চাষে প্রচুর সার লাগে। কিন্তু অনিবন্ধিত বিক্রেতারা বেশি দামে সার বিক্রি করছে, আর নিবন্ধিত বিক্রেতারা বলছে গুদামে সরবরাহ নেই।’
ডিলারদের মতে, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে বিসিআইসি থেকে কোনো সার আসেনি। নভেম্বর মাসের বরাদ্দকৃত সারের একটি বড় অংশ এখনো গুদামে পৌঁছায়নি। ফলে রবি মৌসুমের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তবে ডিসেম্বর মাসের বরাদ্দ এলে সংকট কমে যাবে বলে আশা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ড. সাইফুল আরেফিন বলেন, ‘গত দুই মাসে বিসিআইসির কোনো সার আসেনি। নভেম্বর মাসের বরাদ্দের কিছু অংশ বাফার গুদামে পৌঁছায়নি। যা এসেছে, তাৎক্ষণিকভাবে ডিলারদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। কিছু অসাধু ব্যক্তি কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকদের ডিলারদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে সার কেনার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ডিলাররা জানান, ডিসেম্বর মাসের বরাদ্দ পৌঁছাতে শুরু করেছে। ২/৩ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো বরাদ্দ এলে সারের সংকট দূর হবে।
-সাব্বির হোসেন, লালমনিরহাট
ON/MRF