পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় পূজা মণ্ডপে বরাদ্দকৃত চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দুর্গাপূজা ও জগদ্ধাত্রী পূজার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি চাল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ভুয়া তালিকা তৈরি এবং মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ১৮টি পূজা মণ্ডপের নামে বরাদ্দকৃত চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অলোক চক্রবর্তী জানান, বর্তমান সভাপতি রতন কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ সাওজাল এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রণব রায়সহ কয়েকজন এই অনিয়মে জড়িত। এ বিষয়ে গত ১৪ নভেম্বর তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
পরিদর্শনে দেখা গেছে, অনেক মন্দির বরাদ্দকৃত অর্থ পাননি। আবার যেসব মন্দির বরাদ্দ পেয়েছেন, সেখানেও পূজা অনুষ্ঠিত হয়নি। অভিযোগ অনুযায়ী, ১০৩টি পূজা মণ্ডপের তালিকা তৈরি করে সরকারি বরাদ্দ নেওয়া হলেও প্রকৃত পূজা মণ্ডপের সংখ্যা এর চেয়ে কম।
বড় শিংগা সার্বজনীন শ্রী শ্রী গোবিন্দ ও দুর্গা মন্দিরের সহ-সভাপতি কেশব চন্দ্র রায় বলেন,
‘আমাদের মন্দিরে দুর্গা ও জগদ্ধাত্রী পূজা হয়নি। তবু আমাদের নামে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। এ টাকা পূজা উদ্যাপন কমিটি আত্মসাৎ করেছে।’
এ বিষয়ে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি রতন কর্মকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। ১০৩টি মণ্ডপের মধ্যে যারা দুর্গাপূজা ও জগদ্ধাত্রী পূজা করেছেন, তাদের সবাইকে চালের টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু মণ্ডপের অতিরিক্ত নাম দিয়ে আমাদের নাম্বার ব্যবহার করা হতে পারে।’
সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ সাওজাল জানান, ‘দেশের পরিস্থিতি খারাপ থাকায় আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে বিষয়টি সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেখেছেন।’
মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিলন তালুকদার বলেন, ‘৬২টি দুর্গাপূজা ও ৪১টি জগদ্ধাত্রী পূজা মণ্ডপ সরেজমিনে পরিদর্শন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল কাইয়ূম বলেন, ‘তালিকা যাচাই-বাছাই করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ দেয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাবেক নেতারা জানান, সরকারি চাল বরাদ্দ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলছে। তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন।
এ ঘটনার জেরে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মো. মেহেদী হাসান, পিরোজপুর
ON/MRF