রাজাপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ আজও অবহেলিত
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও রাজাপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সাতটি স্থানের মধ্যে দুটি বধ্যভূমি ও তিনটি গণকবর অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। এসব স্থান সংরক্ষণের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় তারা বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৩ নভেম্বর ঝালকাঠির রাজাপুর থানা বরিশাল অঞ্চলের প্রথম পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিতি পায়। এদিন ভোর রাতে পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সেই সঙ্গে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
২২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে রাতভর তীব্র সংঘর্ষ চলে। ২৩ নভেম্বর ভোর রাত ৪টার দিকে ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরের নেতৃত্বে পরিচালিত এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা শত্রুদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। এই যুদ্ধে ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমর গুলিবিদ্ধ হন এবং তার অসাধারণ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব অর্জন করেন।
যুদ্ধে তিন শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার সাহসিকতায় রাজাপুর থানা শত্রুমুক্ত হয়। তবে এই স্বাধীনতা অর্জনের পথে আঙ্গারিয়া গ্রামের দুই মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ও বাবুল হোসেন শহিদ হন। একই যুদ্ধে শহিদ হন আবদুর রহমান ও আব্দুর রাজ্জাক এবং গুরুতর আহত হন মো. হোসেন আলীসহ প্রায় ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সালে রাজাপুরে মুক্তিযোদ্ধা মিলন কেন্দ্র নির্মিত হলেও এখনো বধ্যভূমিগুলোতে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহুল চন্দ বলেন, ‘বধ্যভূমিতে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়া বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
-মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি
ON/MDK