দৈনিক ১০ টাকায় ভাত-ডাল, ডিম কিংবা খিচুড়ি: শিক্ষার্থীদের পাশে দইখাওয়া কলেজ

দইখাওয়া আদর্শ কলেজের ‘টেন টাকা ফুড’ ক্যান্টিন: শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার দইখাওয়া আদর্শ কলেজে পাঁচ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য ‘টেন টাকা ফুড’ নামে একটি ক্যান্টিন চালু রয়েছে। মাত্র ১০ টাকায় ডাল-ভাত, ডিম, কিংবা খিচুড়ি খেয়ে দুপুরের ক্ষুধা মেটানোর সুযোগ পাচ্ছে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
কেন ও কীভাবে শুরু হলো এই উদ্যোগ
২০১৮ সালে কলেজ অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন নিজস্ব তহবিল এবং বন্ধুদের সহযোগিতায় এই ক্যান্টিন চালু করেন। সীমান্তবর্তী এলাকার দরিদ্র পরিবারগুলো থেকে আসা শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার নিশ্চিত করাই ছিল এর লক্ষ্য। শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টায় গেট থেকে ১০ টাকার টিকিট সংগ্রহ করে, যা দিয়ে দুপুর ১টায় খাবার গ্রহণ করে।
ক্যান্টিনের প্রভাব ও চ্যালেঞ্জ
কলেজটির মোট শিক্ষার্থী প্রায় ৭০০ জন। এর মধ্যে প্রতিদিন ২০০-২৫০ শিক্ষার্থী ১০ টাকার খাবার গ্রহণ করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, এ উদ্যোগ তাদের পড়ালেখায় আরও মনোযোগী হতে সাহায্য করছে। তবে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্যান্টিন পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে অধ্যক্ষকে।
অধ্যক্ষ মোফাজ্জাল হোসেন বলেন, ‘সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী সকালে না খেয়ে সাইকেল চালিয়ে কলেজে আসে। দুপুরে খাবার না খেলে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এ জন্যই ক্যান্টিনটি চালু করেছি। তবে বর্তমানে খরচ বেড়ে যাওয়ায় একবেলা খাবার নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যদি দানশীল ব্যক্তিরা এগিয়ে আসতেন, তাহলে খাবারের মান উন্নত করা সম্ভব হতো।’
শিক্ষার্থী ও রান্নার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অভিমত
শিক্ষার্থী মৃন্ময় সজল বলেন, ‘আমাদের কলেজে একটি মানসম্মত ক্যান্টিন রয়েছে। বাইরের খাবার খেতে হয় না। এজন্য আমাদের অধ্যক্ষ স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।’
রান্নার দায়িত্বে থাকা মনোয়ারা বেগম জানান, ‘প্রতিদিন ২০০-২৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য রান্না করি। তাদের খাওয়াতে আমার ভালো লাগে।’
উপসংহার
দইখাওয়া আদর্শ কলেজের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং খাবারের মান উন্নত করতে বৃত্তবানদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
-সাব্বির হোসেন, হাতীবান্ধা
ON/MDK