গ্রামটির মানুষ ভুগছে শ্বাসকষ্টে, মারা যাচ্ছে গরু-ছাগল, নষ্ট হচ্ছে ফসল
কেউ ভুগছেন শ্বাসকষ্টে, কারও মারা যাচ্ছে গরু-ছাগল। আবার কারও নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। আগের মতো ফল ধরছে না গাছে।
এমন সব সমস্যার মধ্যে দিন কাটছে ঢাকার অদূরে শিল্পনগরী গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামের বাসিন্দাদের। তাঁরা বলছেন, গ্রামে থাকা একটি অবৈধ কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া, পানি, বর্জ্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এতে অনেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে। জমির ঘাস খেয়ে মারা যাচ্ছে গরু-ছাগল। ধ্বংস হচ্ছে গ্রামের জীববৈচিত্র্য।
গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আরেফিন বাদল বলেন, দুই সপ্তাহ আগে স্থানীয় এক বাসিন্দা অবৈধ কারখানাটির বিষয়ে অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন। সিসা গলানোর জন্য কোনো কারখানার অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তাঁরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে কারখানাটিতে অভিযান চালাবেন।
এলাকাবাসী বলছেন, কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামে জমি ভাড়া নিয়ে ২০১৫ সালের দিকে একটি চীনা কোম্পানি এই কারখানা করে। ২০২০ সালের দিক থেকে কারখানার ধোঁয়া, বর্জ্য ও পানির ক্ষতিকর প্রভাব তাঁরা পেতে শুরু করেন, তখন থেকে গাছের পাতা মরে যাওয়া শুরু হয়। জমির ঘাস খেয়ে পেট ফুলে মারা যায় অনেক গেরস্তের গরু-ছাগল। কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের গাছে ফল ধরা কমতে থাকে। এলাকায় শ্বাসকষ্টের রোগী বেড়ে যায়। পরে কারখানা বন্ধ করতে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। দুবার কারখানাটি সিলগালা করে পুলিশ প্রশাসন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে কারখানাটি আবার চালু হয়।
অবৈধ কারখানাটি এত দিন ধরে চলছে; কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, জানতে চাইলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আরেফিন বাদল দাবি করেন, কারখানাটির বিষয়ে আগে জানতেন না। তিনি দুই সপ্তাহ আগে তথ্য পেয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কারখানা পরিচালনা ও পরিবেশ দূষণ নিয়ে কথা বলতে গত বৃহস্পতিবার এলাকাটিতে যান গণমাধ্যমকর্মীরা তবে কারখানাটির মালিক ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
কারখানাটির মালিক একজন চীনা নাগরিক বলে জানা যায়। তাঁর কারখানায় দোভাষী হিসেবে কাজ করেন দুই বাংলাদেশি। তাঁদের একজন গনমাধ্যমকে বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র নিয়ে ঝামেলা আছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কয়েকবার এসেছিলেন। এরপর কোনো ছাড়পত্র পাওয়া গেছে কি না, তা তিনি জানেন না। আগে এখানে দুটি কারখানা ছিল। তখন গরু-ছাগল মারা যেত, গাছপালার ক্ষতি হতো। তবে বছরখানেক আগে একটি কারখানা চলে গেছে।