রায়পুরায় দুই পক্ষের টেঁটা সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণে আহত অন্তত ১২
নরসিংদীর রায়পুরায় জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে দুই বংশের মধ্যে টেঁটা সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আহতের সংখ্যা অন্তত ১২ জন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের মনসুর আলী বাড়ি ও সাবুদ আলীর বাড়ির বংশের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে মনসুর আলীর পক্ষে আহত হন কালিকাপুর গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে মকবুল হোসেন(২৫), শুক্কুর আলীর ছেলে নাজীর হোসেন৪০), মৃত সাদত আলীর ছেলে আশরাফ আলী(৪৫) মৃত মুক্তিযোদ্ধা শুক্কুর আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৫) ও ছায়দুল ইসলাম(২৫) এবং শুক্কুর আলীর স্ত্রী আমেনা বেগম (৬০), বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী সখিনা বেগম, লতিফা বেগম (৩০) সুবুর মিয়ার ছেলে বশির মিয়া(২২) সেলিম মিয়া (৪০), তৈয়ব আলী(৩৫), ফয়সাল(২২), সেলিম(৪০)। এছাড়া সাবুদ আলীর পক্ষে আহত হন মস্তু মিয়ার ছেলে মোখলেস (৫০),আলী আজমের ছেলে নাজীর মিয়া, কালু মিয়ার ছেলে লাক মিয়া(৪২)। তারা সাবুদ আলীর বাড়ির পক্ষের লোক। আহতরা সবাই কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আহতদের মধ্যে মকবুল মিয়া ককটেল বিস্ফোরণে চোখে গুরুত্বর আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। এছাড়া অন্যান্যরা রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর আগে নজীর মিয়ার একই এলাকার হাসান মিয়ার ছেলে মনু মিয়ার কাছ থেকে একটি জমি ক্রয় করে। একই জমি অন্য আরেকজনকে কিনে দিতে চান নান্নু মিয়া মেম্বার। এ নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্য সালিশি মীমাংসায় সুরাহা না হওয়ায় উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এরি জেরে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত মকবুল হোসেন বলেন, তারা আজ ভাড়াটিয়া দুই তিনশ লোক আমাদের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুলি ছুড়ে। পরে ২০-৩০টা ককটেল ফাটিয়ে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে ৮-১০ জনকে গুরুতর আহত করে। আহত বশির মিয়া বলেন, এক বছর যাবৎ তাদের সাথে জমি নিয়ে ঝামেলা। মিমাংসা করবে বলে বার বার ঝামেলা বাঁধিয়েই রাখছে। তারা আওয়ামীলীগের লোক ছিলো। বর্তমানে তারা বিএনপির নাম করে আমাদের উপর অন্যায় ভাবে জোর জবরদস্তি করে যাচ্ছে। আমরা তাদের হাত থেকে জীবনের নিরাপত্তা ও বিচার চাই।
আহত নজীর মিয়া বলেন, আমি একটা জমি কিনেছি। জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। গতকাল এটা নিয়ে মিমাংসায় বসলে বিরোধে জড়িয়ে আমার একজন লোককে পিটিয়ে আহত করে। এরই জেরে পুনরায় আজ ভোরে নান্নু মিয়া মেম্বার ও বরকত আলীর নেতৃত্বে হুমায়ুন কবির হুমায়ুন সাবুত আলীসহ দুই তিনশ লোক আমাদের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে নারী পুরুষসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এ বিষয়ে নান্নু মিয়ার মুঠোফোনে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।
একই বিষয়ে সাবুত আলীর পক্ষের বরকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে মনসুর আলীর বাড়ির লোকেরায় ঝগড়ায় জড়ায়। এখানে আমার সম্পৃক্ততা নেই। আমি এ ঘটনায় জড়িত নই। গেলো পরশু রাতে তারা মিমাংসায় বসে বিরোধে জড়ান। এরই জেরেই আজ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা ডাক্তার মো মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, আহত দুইজন চিকিৎসা নেন।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে শুনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।