জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার দ্বায়িত্ব পেলে কেউ মানুষের ওপর জুলুম করতে পারবেনা: জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে লেখাপড়া করে যুবকরা বেকারত্বের অভিশাপে আত্মহত্যা করবে না। যেখানে শিক্ষা অর্জন করে সঙ্গে সঙ্গে কাজ পাবেন।” তিনি আরও বলেন, “যেখানে অফিস-আদালত, কোর্ট-কাচারী কোথাও গিয়ে আপনি লাঞ্চিত হবেন না এবং কোন মানুষ হয়রানীর শিকার হবে না। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবেন এবং শ্রমিক তার শ্রমের ন্যায্য মূল্য পাবেন। বিচারক তার আসনে বসে মানুষের ওপর জুলুম করবেন না।”
আজ সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে ঝালকাঠি শহরের ব্র্যাক মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে জেলা ইউনিয়ন নেতাদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ধর্মীয় উপাসনালয়ে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না, এবং যার যার ধর্ম সে পালন করবে। এখানে জাতপাত ও ধর্মের ভেদাভেদ থাকবে না।” তিনি উল্লেখ করেন, “যে দেশে শাসকরা অন্যায় ও জুলুমে দেশটাকে পূর্ণ করে দেয় এবং জনগণ চুপচাপ সহ্য করে, সে সমাজে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি নেমে আসে। তবে, যদি জনগণ শাসকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা করে, তখন আল্লাহর সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছে আসে।”
তিনি বলেন, “সাড়ে ১৫ বছর ধরে এই দেশে জনগণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি, তারা মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমরা অতীতে ধৈর্য ধরেছি, এখনো ধরছি, আগামীতেও ধরব।”
তিনি আরও বলেন, “যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই, সেখানে জনগণ তাদের অধিকার সম্মানের সঙ্গে পাবেন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনেও কেউ সুযোগ হারাবে না।”
ডা. শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “দেশটি খুন, ক্রসফায়ার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ভরে গেছে। বহু মায়ের বুক খালি হয়েছে, এবং বাবার সামনে থেকে তার সন্তানকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়েছে। বিচারবিহীন হত্যাকাণ্ডও ঘটানো হয়েছে।”
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, “বিএনপি জামায়াতে ইসলামের ১১ জন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। তাদের মধ্যে দুইজন সাবেক আমীরসহ ১১ জন নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কেউ ফাঁসির দণ্ড পেয়েছে, কেউ আবার কারাগারে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আমরা এই অসমতার অবসান ঘটাবো এবং একটি সত্যিকার ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব।”
সম্মেলনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, জামায়াত নেতা মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তীতে, জামায়াতের আমীর ঝালকাঠি নেছারাবাদ এনএস কামিল মাদ্রাসার মাঠে একটি সুধি সমাবেশে অংশ নেন।
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি
ON/RMN