ডোমার হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ ৬ ডিসেম্বর, নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ডোমার উপজেলা পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয়। ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলাকাটি দখল করে নেয়। এরপর ৪ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা বোড়াগাড়ী হাসপাতালের উত্তরদিকে হলদিয়াবন ও বুদলিরপাড় গ্রামে অবস্থান নিয়ে পাক সেনাদের প্রতিহত করতে শুরু করে। দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ ও গোলাগুলি চলে। এতে তিন পাক সেনা নিহত হন এবং দুইজন মুক্তিযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।
৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা যাতে ডোমারে প্রবেশ করতে না পারেন, সেজন্য পাক বাহিনী বোড়াগাড়ী ব্রিজটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। ওই রাতে পাক বাহিনী বোড়াগাড়ীর উত্তরপাড়ায় হামলা চালিয়ে সাত জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা ডোমার শহরে প্রবেশ করে এবং শহরটিকে হানাদার মুক্ত করে।
ডোমার উপজেলায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা একজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ‘আমরা ফ্লাইট লেঃ ইকবালের নির্দেশে ৬ ডিসেম্বর বোড়াগাড়ী হাসপাতালে একত্রিত হই। ভোরে মেজর ছাতোয়াল ও মুক্তিযোদ্ধা প্লাটুন কমান্ডার আমিনার রহমান আমাদের সাথে যোগ দেন। আমরা এক হয়ে ৬ ডিসেম্বর সকালে ডোমার শহরে প্রবেশ করে ডোমারকে হানাদার মুক্ত করি।’ তিনি আরও জানান, সে সময়ের ৬ নম্বর সেক্টর কমান্ডার খাদিমুল বাশারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় পতাকা উত্তোলন করে ডোমারকে মুক্ত করেন।
পাকহানাদার বাহিনীর অত্যাচারে ডোমারের অসংখ্য মানুষ নির্যাতিত হন, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়, লুটপাট চলে এবং অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। তাদের নির্যাতনে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন। ওই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হলো আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে পড়লে এখনো মনে শিহরণ জাগে, গা শিউরে ওঠে।’
রাকিবুল হাসান, ডোমার ,নীলফামারী
ON/RMN