কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটা: কৃষিজমি ধ্বংস ও পরিবেশ হুমকিতে

কুড়িগ্রামের উত্তর ধরলা (নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, ভুরুঙ্গামারী) অঞ্চলে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা অসংখ্য ইটভাটা কৃষিজমি ও পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এসব ইটভাটা গড়ে উঠছে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই।
ইট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাটি ফসলি জমি থেকে সংগ্রহ করায় কৃষিজমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। এতে খাদ্য উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি মৌসুমি ফলজ গাছের উৎপাদনেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ ধরনের কার্যক্রম এলাকার কৃষির জন্য হুমকি।
নাগেশ্বরীর বিন্নাবাড়ি এলাকার কৃষক রিয়াজুল ইসলাম বলেন,
‘আশপাশে অনেক ইটভাটা তৈরি হয়েছে। সরকারি নিয়ম মানছে কি না তা কেউ বলে না। জমির মাটি কেটে নেওয়ায় আশেপাশের আবাদি জমি হুমকিতে পড়ছে। জমিতে পানি দিলে তা জমে না। এ ছাড়া ইটভাটার ভারী যানবাহন রাস্তা নষ্ট করছে। পাকা রাস্তা ভেঙে এখন চলাচল করাই মুশকিল। ইটভাটা মালিকরা ক্ষমতাবান, আমরা কিছু বলতে পারি না।’
তার কথার সত্যতা পাওয়া গেছে নাগেশ্বরী-ফুলবাড়ী সড়ক পরিদর্শনে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্ত, ভাঙা গাইড ওয়াল ও রাস্তার পাশের জমিতে ধসের চিত্র দেখা যায়। এসব রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক্টর এবং ট্রাক চলাচল করে।
ইটভাটাগুলোতে কাঠ ও কয়লা পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। এ কারণে এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলতে হবে। কৃষিজমি রক্ষা এবং রাস্তার সুরক্ষায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইট উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে।
কৃষি ও পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে এই সমস্যাগুলো আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
নাগেশ্বরী থেকে ফুলবাড়ী যাওয়ার মাত্র ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ১০টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে, যা স্থানীয় পরিবেশ ও কৃষির জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে।
– জাহিদ খান, কুড়িগ্রাম
ON/MRF