ওসি সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে পাংশায় মানববন্ধন

রাজবাড়ীর পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হাওলাদার এবং এক স্থানীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পাংশার সচেতন নাগরিক সমাজ।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় শহরের আব্দুল মালেক প্লাজার সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পাংশা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক, জিয়া পরিষদের সভাপতি ও পাংশা মহিলা কলেজের শিক্ষক এম এ জিন্নাহর সভাপতিত্বে এবং যুবদল নেতা খলিলুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাছপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মিয়া টিপু, পাংশা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার সরদার, পাংশা উপজেলা জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আবুল হোসেন, কলেজ শিক্ষক আলমগীর হোসেন, জামায়াত নেতা আবু সাঈদ, জেলা ছাত্রদলের নেতা সজীব রাজা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাগর শিকদার।
বক্তারা বলেন, ‘একজন ভালো পুলিশ অফিসারের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং যারা হয়রানিমূলকভাবে মামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
অন্যদিকে, ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন দাবি করেছেন, ‘ওই গৃহবধূ একটি অপহরণ মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টির জন্য তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিমা খাতুন নামে এক গৃহবধূর বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা রয়েছে, যার সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ২৫ মার্চ মিনু খাতুন (৩০) নামে অপর এক নারী পাংশা থানায় মামলা করেন। মামলায় পাঁচ নম্বর আসামি হিসেবে রিমা খাতুনের (২৮) নাম রয়েছে।
অন্য আসামিরা হলেন রিমা খাতুনের স্বামী শরিফুল ইসলাম (৩২), ভাসুরের ছেলে জিসান খান (১৯), ভাসুর রফিকুল ইসলাম মজনু (৪৫) ও জা জোছনা খাতুন (৩৮)।
মামলার এজাহারে মিনু খাতুন অভিযোগ করেন, ‘আমার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী। মেয়ে মাহিমা আক্তার অধরা ও জিসান খান কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ত। স্কুল সূত্রে পরিচয়ের পর জিসান আমার মেয়েকে বিরক্ত ও কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। আমরা কুষ্টিয়া ছেড়ে পাংশা থানার পারনারায়ণপুরে চলে আসি। এখানেও জিসান আমাদের ঠিকানা জোগাড় করে মেয়েকে বিরক্ত করতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২২ মার্চ সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে পারনারায়ণপুর ব্রিজ এলাকায় গেলে জিসান তার বাবা-মা, চাচা ও চাচির সহায়তায় তাকে অটোতে তুলে অপহরণ করে। তার সঙ্গে একটি স্মার্ট ফোন, স্বর্ণের চেইন, দুল ও আংটি ছিল।’
অপরদিকে, রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে লক্ষণদিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্ত্রী রিমা খাতুন রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও কাচারীপাড়া গ্রামের আরিফ হোসেনকে অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির বিষয় উল্লেখ করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে ফরিদপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
–আল আমিন হোসেন, পাংশা
–ON/SMA