অপহরণ মামলার আড়ালে ওসির বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা!

রাজবাড়ীর পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও উপপরিদর্শক (এসআই) হিমাদ্রি হাওলাদারসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণচেষ্টা মামলার বাদী রিমা খাতুন নিজেই একটি অপহরণ মামলার আসামি।
ওসি সালাউদ্দিন দাবি করেছেন, ‘ওই গৃহবধূ তৃতীয় পক্ষের প্ররোচনায় পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে যে মামলা করেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মূলত, পাংশা থানায় দায়েরকৃত অপহরণ মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং পুলিশের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির জন্য তিনি এই মামলা করেছেন।’
জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ পাংশা থানায় মিনি খাতুন (৩০) নামের এক নারী একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন, যার এজাহারে রিমা খাতুন (২৮) পাঁচ নম্বর আসামি। মামলার অন্য আসামিরা হলেন—রিমার স্বামী শরিফুল ইসলাম (৩২), ভাসুরের ছেলে জিসান খান (১৯), ভাসুর রফিকুল ইসলাম মজনু (৪৫) এবং জা জোছনা খাতুন (৩৮)।
মিনি খাতুন অভিযোগ করেছেন, তার মেয়ে মাহিমা আক্তার অধরা ও আসামি জিসান খান একই স্কুলে লেখাপড়া করত। স্কুলে গিয়ে জিসান তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় বিরক্ত করত এবং কুপ্রস্তাব দিত। বিষয়টি নিয়ে তিনি জিসানের পরিবারের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো প্রতিকার পাননি। পরবর্তীতে পরিবার নিয়ে পাংশায় চলে এলেও জিসান পিছু ছাড়েনি।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মাহিমা প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয় এবং আর ফিরে আসে না। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানা যায়, পারনারায়নপুর ব্রিজের কাছে জিসান তার বাবা, মা, চাচা ও চাচির সহায়তায় মাহিমাকে ফুসলিয়ে অজানাস্থানে নিয়ে গেছে। মেয়ের সঙ্গে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোনও সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, গত ৬ এপ্রিল দুপুরে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রিমা খাতুন বাদী হয়ে পাংশা থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, এসআই হিমাদ্রি হাওলাদার ও হাবাসপুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামের আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলাটি আমলে নিয়ে রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুর কার্যালয়ের পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
–আল আমিন হোসেন, পাংশা
–ON/SMA