ঈদ বাজারে জমজমাট বাবুরহাট, তবে বিক্রি আশানুরূপ নয়

ঈদকে সামনে রেখে দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাটে ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়লেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুতার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কাপড়ের উৎপাদন খরচ বেড়েছে, যার ফলে দামও বেশি।
সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তিন দিন ধরে চলে এই হাটের বেচাকেনা। শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, থ্রি-পিস, শার্ট-পিস, প্যান্ট-পিস, পাঞ্জাবির কাপড়সহ দেশীয় তৈরি বিভিন্ন ধরনের কাপড় বিক্রি হয় এখানে। ছোট-বড় প্রায় পাঁচ হাজার দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ করা গেছে।
শুক্রবার সকাল থেকেই ক্রেতারা বাজারে আসতে শুরু করেন। শেখেরচর অংশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা লরি ও পিকআপ ভ্যান। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর কষাকষি বাড়তে থাকে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্রেতারা দিনভর কেনাকাটা করে নিজ নিজ জেলায় ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ কাপড় কিনে আড়ৎদারদের মাধ্যমে বুকিং দিয়ে দিচ্ছেন, যা পরবর্তীতে নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘একমাত্র এই হাটেই পাইকারি দামে দেশীয় সব ধরনের কাপড় পাওয়া যায়। তাই দোকানের জন্য এখান থেকেই কাপড় কিনতে আসি। তবে এবার দাম তুলনামূলক বেশি।’
সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এখান থেকে পাইকারি দামে কাপড় কিনে নিজ দোকানে খুচরা বিক্রি করি। পরিবহন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো থাকায় এখানে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’
বিক্রেতারা জানান, এবার দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতাদের সংখ্যা কিছুটা কম। পাইকারি কাপড় ব্যবসায়ী ইয়ামিন মিয়া বলেন, ‘সুতার দাম বাড়ার কারণে কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে। তাই বিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না। তবে আগামী সপ্তাহে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করছি।’
বাবুরহাটের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছরই ঈদের জন্য নিত্যনতুন ডিজাইনের কাপড় আনা হয়। খুচরা বাজারে পুরোপুরি বেচাকেনা শুরু না হলেও পাইকাররা আগেভাগেই কাপড় কিনছেন। আশা করি, সামনে বেচাকেনা আরও বাড়বে।’
লুঙ্গি বিক্রেতা হিমেল বলেন, ‘আমরা হাতে বুনা এশিয়ান লুঙ্গির বাহারি কালেকশন এনেছি, কিন্তু এখনো আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। তবে আগামী সপ্তাহে ভালো বেচাকেনার আশা করছি।’
শেখেরচর-বাবুরহাট বণিক সমিতির সভাপতি বোরহানউদ্দিন জানান, ‘ঈদকে ঘিরে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ৪ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার বেচাকেনার আশা করা হলেও এখনো সেই মাত্রায় পৌঁছায়নি। তবে আগামী সপ্তাহে পরিস্থিতি আরও ভালো হতে পারে।’
–মাইনউদ্দিন সরকার, নরসিংদী
–ON/SMA