মানচিত্র বদলে নতুন দেশের ঘোষণা আসছে, বাংলাদেশ পেতে যাচ্ছে নতুন প্রতিবেশী রাষ্ট্র?

বিশ্বের বৃহত্তম ও জনবহুল মহাদেশ এশিয়া, যেখানে প্রায় ৪০০ কোটিরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মহাদেশে জনসংখ্যা প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এশিয়া ৪৯টি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো অন্যতম। এবার দক্ষিণ এশিয়ায় আরও একটি নতুন রাষ্ট্রের আবির্ভাবের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা বাংলাদেশের মানচিত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার, যা একসময় বার্মা নামে পরিচিত ছিল, বর্তমানে বড় ধরনের রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাত এবার স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দিকে এগোচ্ছে। এই অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে তারা সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে একের পর এক শহর দখল করে নিচ্ছে।
১৭৮৫ সাল পর্যন্ত আরাকান একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল, যা পরে বার্মিজ শাসনের অধীনে চলে যায়। তবে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা কখনোই নিভে যায়নি। ২০০৯ সালে গঠিত আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক লড়াই শুরু করে এবং সাম্প্রতিক বিজয়গুলোর ফলে তারা রাখাইনের প্রায় ৮০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে।
বিশ্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খুব শিগগিরই আরাকান আর্মি একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণা দিতে পারে। বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তের ওপারে যে কোনো সময় নতুন একটি রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
আন্তর্জাতিক মহলও রাখাইনের স্বাধীনতা নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে। চীন, ভারত, এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো ইতোমধ্যে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। চীন রাখাইনে গভীর সমুদ্র বন্দরসহ বিশাল বিনিয়োগ করেছে এবং ভারতের ‘কালাদান মেগা প্রকল্প’ রাখাইনের ওপর নির্ভরশীল। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জন্যও এই অঞ্চল কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন রাষ্ট্র গঠিত হলে বাংলাদেশের ওপর এর কী ধরনের প্রভাব পড়বে, সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে। রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক মহলের নজর এখন দক্ষিণ এশিয়ার এই ভূখণ্ডের দিকে, যেখানে যে কোনো মুহূর্তে স্বাধীনতার ঘোষণা আসতে পারে।
এখন দেখার বিষয়, দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে রাখাইন কীভাবে আত্মপ্রকাশ করে এবং এর ফলে আঞ্চলিক রাজনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসে।
সূত্রঃ Donews24
ON/SMA