অতিরিক্ত সারের প্রভাবে কমছে মৌমাছি ও ফুলের সংখ্যা: গবেষণা জীববৈচিত্র্যে সারের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য

কৃষিজমিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগের ফলে মৌমাছি ও ফুলের সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। রথামস্টেডের দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা প্রকল্প ‘পার্ক গ্রাস এক্সপেরিমেন্ট’-এর সাম্প্রতিক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার ফলাফল ‘npj Biodiversity’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, নাইট্রোজেন সার ব্যবহারের কারণে ফুলের সংখ্যা পাঁচগুণ হ্রাস পায় এবং মৌমাছির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসে। প্রধান গবেষক ড. নিকোলাস বালফোর বলেন, ‘সারের পরিমাণ বাড়ালে পরাগায়নকারীর সংখ্যা কমে যায়। এটি সরাসরি সংযোগ, যা আগে এত স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। এর প্রভাব খাদ্যশৃঙ্খল পর্যন্ত পৌঁছায়।’
বিশ্বের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কৃষিজমি ঘাসজমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা ৮০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবিকার উৎস। তবে নাইট্রোজেন সার প্রয়োগের ফলে দ্রুত বর্ধনশীল ঘাস অন্যান্য ঘাস ও ফুলকে দমিয়ে রাখে, যা পরাগায়নকারী পোকামাকড়ের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, রাসায়নিক সার মুক্ত প্লটে মৌমাছির সংখ্যা নয়গুণ বেশি। এমনকি নাইট্রোজেন ব্যতীত অন্যান্য সার প্রয়োগ করা প্লটেও ফুল ও পরাগায়নকারীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি ছিল।
ড. বালফোর মনে করেন, বিভিন্ন প্রজাতির ফুল থাকলে বিভিন্ন পরাগায়নকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও কম উৎপাদন সাধারণত নেতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হয়, তবে ঘাসজমির উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দিলে বহুমুখী ভূমি ব্যবস্থার অনেক সুবিধা পাওয়া সম্ভব।’
রথামস্টেডে ১৮৫৬ সালে শুরু হওয়া ‘পার্ক গ্রাস এক্সপেরিমেন্ট’ বিশ্বের দীর্ঘতম পরিবেশগত গবেষণা প্রকল্প। এটি মূলত মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য শুরু হলেও বর্তমানে কৃষি ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করছে।
গবেষণা পরিবেশ রক্ষায় সারের সীমিত ও সঠিক ব্যবহার এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থার প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছে। এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও কৃষি ব্যবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ON/SMA