দেশে চূড়ান্তভাবে সাকার মাছ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মৃনাল কান্তি দে গত ১১ জানুয়ারি এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন বলে জানা গেছে।
১৯৮৫ সালের ‘প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিস রুলস’-এর বিধি সংশোধন করে নিষিদ্ধের তালিকায় যুক্ত করা হবে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা এ মাছের নাম।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সাকার মাছ নিষিদ্ধ করতে প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ অ্যাক্ট, ১৯৫০–এর ১৮ ধারা সংশোধন প্রস্তাব করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছিল, মাছটি নিয়ে কারও কোনো আপত্তি বা পরামর্শ থাকলে সেটি লিখিত আকারে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছিল। সেজন্য সময় দেওয়া হয়েছিল অনধিক দুই মাস।
সে সময় অতিক্রম করার পর সরকার মাছটিকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে।
২০০৮ সালে আফ্রিকার রাক্ষুসে মাছ পিরানহা বাংলাদেশে চাষ করা, পোনা উৎপাদন, বংশবৃদ্ধি, বাজারজাত করা ও কেনাবেচা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
২০১৪ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন ও বিপণনের ওপর। একই ধরনের কারণে এবার ‘সাকার মাউথ ক্যাট ফিশ’ নিষিদ্ধ হচ্ছে বলে জানান মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (মৎস্যচাষ) ড. মো. খালেদ কনক।
সম্প্রতি ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীসহ আশেপাশের নদী ও জলাশয়ে ব্যাপক আকারে ধরা পড়তে থাকে সাকার ফিশ। ঢাকার পাশের জেলা গাজীপুরের জলাশয়ে অতিমাত্রায় পাওয়া যেতে থাকে সাকার ফিশ।
দেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতেও ছড়িয়ে পড়েছে এই সাকার মাছ। ফলে দেশের মৎস্য খাতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা।
সাকার মাছের ইংরেজি নাম Suckermouth Catfish বা Common Pleco। মাছটি দেশের জন্য ক্ষতিকর বলে দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালিয়ে আসছে মৎস্য অধিদপ্তর। মাছটি আশির দশকে প্রথম ব্রাজিল থেকে আনা হয়েছিল বাহারি মাছ হিসেবে। কিন্তু সেটি এখন ছড়িয়ে পড়েছে জলাশয়ে। যাকে জীববৈচিত্র্যের ওপর হুমকি হিসেবে দেখছেন মৎস্যবিজ্ঞানীরা।