এবার হরিজন সম্প্রদায়ের এক বর হেলিকপ্টারে করে কুড়িগ্রাম থেকে নেত্রকোনায় নববধূকে নিয়ে চলে গেলেন। সেই হরিজন সম্প্রদায়ের বরের নাম শ্রী অপু বাসফোর। ওই বর তার প্রয়াত বাবা দিলিপ বাসফোরের ইচ্ছা পূরণে হেলিকপ্টার ভাড়া করে কুড়িগ্রাম শহরের পাওয়ার হাউজ পাড়ার ভুট্র হরিজনের কন্যা শ্রীমতি শনিতা রানীকে বিয়ে করতে আসেন। এরপর তিনি বউ নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।
এদিকে বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়ামে অবতরণ করা গেলিকপ্টার ও বর-কনেকে দেখতে ভিড় জমায় শত শত মানুষ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয় স্থানীয় প্রশাসন। কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার পাওয়ার হাউজ পাড়ার সুইপাড় কলোনীর শ্রী ভুট্র হরিজন ও শ্রীমতি চামেলী হরিজনের কন্যা শ্রীমতি শনিতা রানীর বিয়ে। এরকম একটি দরিদ্র শ্রেণির পরিবারে সাধারণভাবেই বিয়ে হওয়ার কথা থাকলেও নেত্রকোনার বর অপু বাসফোর কনেকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়ার খবরে কৌতুহল ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত চলে বিয়ের ও হেলিকপ্টার আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকা থেকে আসা একটি হেলিকপ্টার অবতরণ করে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠে। হেলিকপ্টারে চড়ে এসে বিয়ে সেটি আবার হরিজন সম্প্রদায়ের বর-কনে। এতে উৎফুল্লতা ছিল চোখে পড়ার মত। বর ও কনের স্বজনরা জানান, বর হেলিকপ্টারে কনে নিয়ে কুড়িগ্রাম থেকে নেত্রকোনায় যাবে। এটি আমাদের নিকট খুবই আনন্দের খবর। কেন না এর আগে কখনও হেলিকপ্টারে করে আমাদের সম্প্রদায়ের কারো বিয়ে হয়নি। আমরা খুবই খুশি।
হেলিকপ্টারে করে বিয়ের বিষয়ে বর অপু বাসফোর জানান, আমার স্বর্গীয় পিতার ইচ্ছা পূরণে এই আয়োজন। আমার বড় ভাই, বোনের সহযোগীতায় এটি সম্ভব হয়েছে। কনে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পেরে আমি আনন্দিত। কনে শনিতার বাবা ভুট্র হরিজন জানায়, আমার পাঁচ মেয়ের মধ্যে শনিতা তিন নাম্বার। যখন এমন একটি প্রস্তাব এলো যে বর নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরী করে তখন না করতে পারলাম না। আমি গরীব মানুষ। কুড়িগ্রাম পৌর সভায় কাজ করি। আমার মেয়েকে বিয়ে করে হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়াটা আমার ভাগ্য। আমি খুবই খুশি। এদিকে, হরিজন সম্প্রদায়ের বিয়ে হলেও জেলায় এটিই প্রথম হেলিকপ্টারে করে বিয়ের বর-কনে যাওয়ার ঘটনা।তাই এ বিয়েতে জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা।