দেশে বেড়েই চলছে পথশিশুর সংখ্যা। নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও গবেষণা বলছে, ঢাকায় প্রায় ১০ লাখ পথশিশুর ৮০ থেকে ৮৫ ভাগই মাদকাসক্ত। যাদের বেশিরভাগই মাদকের পথে পা বাড়ায় ৫ থেকে ৯ বছর বয়সে।
এক পথশিশু জানায়, একদিন এক বন্ধুকে খেতে দেখে ওকে জিজ্ঞেস করি এগুলো কি? ও জানায়, এগুলো খেলে মাথা ঠিক থাকে না। ওর কথা শুনে খেতে মন চায়। খাওয়ার পরে মন চায় আকাশে উড়ি, কাউরে ধইরা মারি, দৌড়াই।
পথশিশুদের নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের একজন আহছানিয়া মিশনের অধিকার ও সুশাসন সেক্টর কর্মকর্তা শেখ মহব্বত হোসেন। তিনি বলেন, এদেরকে আপনি যদি বাংলাদেশ এর নাগরিক মনে করেন, দেশের সম্পদ ভাবেন তাহলে অবশ্যই এদের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করতে হবে।
মাদকের জন্যই বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত হচ্ছে পথশিশুরা। যদিও তা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার পুরোনো বাণী শোনাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহীদ মাহমুদ জানান, মাদকের প্যাকেট বা চালান নিরাপদে পৌঁছে দেয়ার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ মাধ্যম এই শিশুরা। এই শিশুদের মধ্যে অনেকেই বড় হয়ে মাদকের ব্যবসায়ী হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মানজুরুল ইসলাম বলেন, যেখান থেকে এই আঠা বিক্রি করা হয় সেই বিক্রেতাদের প্রতি আহ্বান আপনারা এগুলো নিরাপদে বিক্রি করুন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পথশিশুদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, রাষ্ট্রকেই । না হলে এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়বে। সাথে বোঝা হবে জাতির জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ তৌহিদুল হক জানান, পথশিশুদের যোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠিত করার কথা ভাবলে আমি মনে করি এরা অনেক বড় বিপর্যয়ে আছে। তারা সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিই প্রকাশ করে পথশিশুদের বর্তমান বাস্তবতা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমাজের একটি অংশকে বাদ দিয়ে এগোতে পারবে না রাষ্ট্র। ফলে বিশাল অংশের এই পথশিশুদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই আগামীর বাংলাদেশের জন্য।
সূত্র: চ্যানেল ২৪