বঙ্গোপসাগরে অবস্থান নেওয়া লঘুচাপটি নিম্নচাপ থেকে আরও ঘনীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আজ রোববার রাতে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে সিত্রাং।
রোববার সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, রোববার দুপুর ১২টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উপকূলীয় ১৯টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ। গত ৩ বছরে যে ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়েছে তার চেয়ে এটির আঘাত হানার এরিয়া অনেক বেশি।
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, এর অবস্থান হলো ৮৮. ৫ দ্রাঘিমাংশ এবং ১৬ অক্ষাংশ। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এটি ৮৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ এবং ১৭ ডিগ্রি অক্ষাংশের সংযোগস্থলে পৌঁছার পর সরাসরি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন করে তাহলে যে গতিপথ দেখানো হয়েছে এটি একেবারে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা- উপকূলের ১৯ জেলায় আঘাত হানতে পারে। আর যদি এখন যে ডিরেকশন আছে, উত্তর-পশ্চিম দিকে যাচ্ছে, তাহলে এটি ভারতের ভুবনেশ্বর ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে। এখন পর্যন্ত এটাই আমাদের সর্বশেষ আপডেট।
ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে এবং আঘাত হানার সম্ভাব্য সময় মঙ্গলবার। সোমবার রাতের পর থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে আমাদের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেভাবে ম্যাপিং করা হয়েছে একেবারে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত আমাদের ৭৩০ কিলোমিটার উপকূল সম্পূর্ণরূপে আক্রান্ত হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সুপার সাইক্লোন হবে না। এটা সিভিয়ার সাইক্লোন পর্যন্ত হবে। গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। এটা এখনো ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়নি। সন্ধ্যায় রূপ নেবে। তখন এর নাম হবে সিত্রাং।’
‘সিত্রাং’ আঘাত হানতে পারে ১৯ জেলায়
খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ এবং শরীয়তপুরে আঘাত হানতে পারে সিত্রাং।
আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় বৃহস্পতিবার লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়। শুক্রবার তা সুস্পষ্ট লঘুচাপে ও শনিবার নিম্নচাপে এবং রোববার সকালে তা গভীর নিম্নচাপে রূপ নেয়।