টাঙ্গাইলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার ভোর সকাল থেকেই সন্তোষে মানুষের ঢল নামে। তার অসংখ্য মুরিদান ও ভক্তদের কন্ঠে যুগ যুগ জিও তুমি মওলানা ভাসানী স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে মজলুম জননেতার সমাধিস্থল টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাজার প্রাঙ্গন।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন মওলানা ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা করা হয়। এরপর থেকেই মাজারে ভাসানীর পরিবার, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মরহুমের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শুরু হচ্ছে। এতে ফুলে ফুলে ঢেকে গেছে ভাসানীর মাজার।
ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন পৃথকভাবে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআনখানী, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, কাঙালিভোজ, আলোচনা সভা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের এই দিনে (১৭ নভেম্বর) ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে মওলানা ভাসানীর জন্ম। সিরাজগঞ্জে জন্ম হলেও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার জীবনের সিংহভাগই কাটিয়েছেন টাঙ্গাইলের সন্তোষে। সন্তোষের মাটিতেই তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী তার কৈশোর-যৌবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি তৎকালীন বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ছিলেন। লাইন-প্রথা উচ্ছেদ, জমিদারদের নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন সারাজীবনই তিনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। তার উদ্যোগে ১৯৫৭ সালে কাগমারীতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন বাংলাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সর্বদলীয় ওয়ার কাউন্সিলের উপদেষ্টা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তার সর্বশেষ কীর্তি ছিল ফারাক্কা লং মার্চ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। বঙ্গবন্ধুও তাকে শ্রদ্ধা করতেন পিতার মতো।