সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। জেলা সিভিল সার্জন সুত্রে উল্লাপাড়ায় এর সংখ্যা ২৫ টি। এই সংখ্যার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে অনুমোদন ও হালনাগাদ সনদ।
জানা যায়, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালের মধ্যে সনদ রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের। নেই পরিবেশ অধিদফতরের সনদও। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নাকের ডগায় বসে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে গেলেও দৃশ্যত কোনো ব্যবস্থাই নেয় না স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রয়েছে নিজস্ব দালাল। সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তুলনায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বেসরকারি ক্লিনিকে ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি। ডেলিভারি রোগী এলে নরমাল ডেলিভারি করতে চান না ক্লিনিকের ডাক্তাররা। সিজার করলে রোগীপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। সরেজমিনে ভুক্তভোগী রোগীদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করলে এ তথ্য বেরিয়ে আসে।
অভিযোগ রয়েছে বেসরকারি ক্লিনিকে নিম্নমানের রিএজেন্ট ব্যবহার করছে। অনেক সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কারণে রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষা রিপোর্ট সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। গড়ে উঠা বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক-ল্যাবে রয়েছে এসব অব্যবস্থাপনা। এসব ল্যাবের অধিকাংশেই ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ান নেই। এসব ল্যাব থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর বেশিরভাগ সময় সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ল্যাবের টেকনিশিয়ানে যেসব লোক রয়েছে তাদের বেশিরভাগই কোনো ইউনিফর্ম ও মাক্স পরে থাকে না। ব্যবহার করে না হাতের গ্লাভস।
সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রোগীদের টেস্ট করার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠায় কমিশনের কারণে। অনেক সময় হাসপাতালের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ডাক্তারদের দেখাতে চাইলে তারা ওইসব রিপোর্ট দেখতে চান না। সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেসব রিএজেন্ট ব্যবহার করে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্রেড ওয়ার্ড কোম্পানি জার্মানি ও স্পেন। অপরদিকে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো ভারত ও চীনের নিম্নমানের রিএজেন্ট ব্যবহার করে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ জাহিদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উল্লাপাড়ায় ১২ টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বেসরকারী হাসপাতাল এবং ক্লিনিক রয়েছে ১৩ টি সহ সর্ব মোট ২৫ টি। এর মধ্যে লাইসেন্সের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াধীন আছে ৪ টির। যেসব ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং বিভিন্ন টেস্টের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মূল্য তালিকা দেয়ার জন্য তিনি কথা বলবেন বলে জানান। তবে ওই ৪ টি প্রতিষ্ঠানের নামসহ তালিকা চাইলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং অফিসে এসে তালিকা নিয়ে যেতে বলেন এই প্রতিবেদককে।